প্রধানমন্ত্রী: তবে বাংলাদেশের জনগণও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে

নির্বাচন বানচালের চেষ্টা হলে বাংলাদেশের জনগণও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে। বাংলাদেশে এখন অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের কোনো সুযোগ নেই এবং লঙ্ঘনকারীদের শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। গতকাল নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে অংশ নিতে তিনি এখন নিউইয়র্কে রয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

আওয়ামী লীগের নির্বাচনী সংস্কারের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, নির্বাচনে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হয়েছে এবং জনগণ এখন তাদের ভোটাধিকার নিয়ে যথেষ্ট সচেতন।

তিনি বলেন, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ছাড়া অন্য কেউ বিকল্প উপায়ে ক্ষমতায় আসতে চাইলে তাদের শাস্তি ভোগ করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণ ভোট দিলে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসবে।

নির্বাচন বানচালের চেষ্টা হলে যারা নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা বলছেন, তাদের দিকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি বলতে চাই, দেশের বাইরে থেকেও নির্বাচন বানচালের এই চেষ্টা করা উচিত নয়। দেশের বাইরে থেকে নির্বাচন বানচাল হলে বাংলাদেশের জনগণও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে।

নির্বাচনী সংস্কারের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন ব্যালট বাক্সগুলো স্বচ্ছ এবং জাল ভোট দিয়ে বাক্স ভর্তি করার কোনো সুযোগ নেই। ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে।’

আওয়ামী লীগ নির্বাচন কমিশন গঠন সংক্রান্ত আইন করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ করেছি। নির্বাচন কমিশনকে নিরঙ্কুশ আর্থিক স্বাধীনতা দিয়েছি।’

তিনি বলেন, ইসি এক সময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নিয়ন্ত্রণে ছিল। নির্বাচন কমিশন এখন সম্পূর্ণ স্বাধীন। এটা আওয়ামী লীগ সরকার করেছে। এটা মাথায় রাখতে হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, সংবিধানের ৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জনগণই ক্ষমতার উৎস এবং রাষ্ট্রের মালিক।

বাংলাদেশে নির্বাচনকে ক্ষুণ্ন করার ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত নতুন ভিসা নীতি সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের শাসনামলে অনুষ্ঠিত অনেক নির্বাচন, উপনির্বাচন এবং স্থানীয় সংস্থা নির্বাচনে জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়েছে।

তিনি বলেন, নির্বাচনে জনগণের ম্যান্ডেট পেয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে। তাই আমরাও চাই নির্বাচন অবাধ ও স্বচ্ছ হোক।

ভিসা নীতির ঘোষণায় বিরোধিতার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা এক দৃষ্টিকোণ থেকে ভালো যে বিএনপি নির্বাচন বানচাল করতে পারবে না যেমনটি তারা ২০১৪ সালের নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে করেছিল। .

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কারা আগে নির্বাচনকে ক্ষুণ্ণ করে তা বিবেচনায় নিয়ে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা উচিত। শুধু আওয়ামী লীগকে টার্গেট করলে আমার কিছু বলার নেই।

সায়মা ওয়াজেদকে পরবর্তী নেতৃত্বের পদে নেওয়া হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। বাংলাদেশের জনগণ এবং আমার দল (আওয়ামী লীগ) সিদ্ধান্ত নেবে কে নেতৃত্বে আসবে।’

দুর্নীতি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন অনেকেই ‘ক্ষুদ্র বিষয়কে বাড়াবাড়ি করে’ সংবাদ প্রকাশ করে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করছেন। এই অপচেষ্টা দেশের ভাবমূর্তির জন্য খুবই ক্ষতিকর।

সরকার সামান্য দুর্নীতির ক্ষেত্রেও কাউকে ছাড় দেয় না বলে তিনি মন্তব্য করেন।