প্রধানমন্ত্রী: তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে কারও সঙ্গে আলোচনা হয়নি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সাম্প্রতিক যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রসঙ্গ তোলা হয়নি বলে উল্লেখ করেছেন। বিএনপির আন্দোলনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেছেন, ‘তাদের আন্দোলন সেই আন্দোলনে তো আমরা বাধা দিচ্ছি না।’ আজ শুক্রবার বিকেলে (৬ অক্টোবর, ২০২৩) ঢাকার গণভবনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিষয়ে কেউই কোন কথা বলেননি। এ ধরনের কোন কথা হয়নি এবং কেউ এ ধরনের কথা আমাকে জিজ্ঞাসাও করেনি। আর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের এক অভিজ্ঞতা ২০০৭-০৮ সালে হয়ে গেছে না আমাদের। তারপরেও আবার কেউ তা চাইতে পারে। আর সিষ্টেমটাতো বিএনপিই নষ্ট করে ফেলেছে। কাজেই এরকম কোন কথা হয়নি।’

বিএনপির আন্দোলনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রসঙ্গ তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের যে আন্দোলন সেই আন্দোলনে তো আমরা বাধা দিচ্ছি না। তারা আন্দোলনের নামে লোক সমাগম করে যাচ্ছে, ভালো কথা। এতদিন চুরি চামারি করে যে অবৈধ অর্থ তারা বানিয়েছিল আর যত টাকা মানি লন্ডারিং করেছিল সেগুলোর এখন ব্যবহার হচ্ছে। অন্তত সাধারণ মানুষের হাতে কিছু টাকাতো যাচ্ছে। আমি সেভাবেই বিবেচনা করি। যত আন্দোলন করবে তাতে সাধারণ মানুষের পকেটে কিছু টাকা যাবে। তাই আমি বলেছি কিছু বলার দরকার নেই তারা আন্দোলন করতে থাকুক। কারণ এই টাকাগুলোতো বের হওয়াটাও দরকার।’

আগামী নির্বাচনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রসঙ্গ তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশে নির্বাচনের যে সংস্কারগুলো হয়েছে সেগুলোতো আমরাই করেছি। আওয়ামী লীগ এবং তাদের জোট আন্দোলনের মাধ্যমে বহু রক্তের বিনিময়ে এসব অর্জন করেছে। এই কথাটা আমি বলেছি তাদেরকে, আমাকে অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন শেখাতে হবেনা। কারণ বাংলাদেশের মানুষের ভোটের অধিকার আদায়ের আন্দোলন-সংগ্রাম আমরা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে করেছি এবং সেটা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তারপর সেভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পেরেছে বলেই জনগণ আমাদের বারবার ভোট দিয়েছে এবং একটানা ক্ষমতায় আছি বলেই আজকে অর্থনৈতিক উন্নতিটা হয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্কুল জীবন থেকে আমরা রাস্তায় আন্দোলন সংগ্রাম করছি। এমন নয় যে নতুন এসেছি। আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে করেছি, ইয়াহিয়া খানের বিরুদ্ধে করেছি। জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া সবই তো ভোট চোর।

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের ভোট চুরি করা লাগে না। আওয়ামী লীগকে জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দেয়। আওয়ামী লীগ কাজের মধ্যে দিয়ে আস্থা অর্জন করেছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৭ থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিউইয়র্ক এবং ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থান করেন। এ সময়ে তিনি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন এবং অন্যান্য উচ্চ-পর্যায়ের পক্ষ এবং দ্বিপাক্ষিক অনুষ্ঠানে যোগদান করেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সংবর্ধনায় যোগ দেওয়ার পাশাপাশি ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসও পরিদর্শন করেন।

৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে অবস্থানকালে প্রধানমন্ত্রী আরও বেশ কয়েকটি সৌজন্য সাক্ষাত করেন এবং লন্ডনে বাংলাদেশি প্রবাসীদের দেওয়া সংবর্ধনায় যোগ দেন।