কী ঘটতে যাচ্ছে ২৮ অক্টোবর!
- Details
- by নিজস্ব প্রতিবেদক
আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবি নিয়ে ২৮ অক্টোবর রাজধানী ঢাকার নয়াপল্টনে মহাসমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে প্রধানবিরোধী দল বিএনপি। এই সমাবেশ থেকেই সরকার হটানোর আন্দোলনের ‘মরণকামড়’ দিতে চায় বিএনপি।
মহাসমাবেশ সফল করতে এরইমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে দলটি। দেশের প্রতিটি জেলা-উপজেলা থেকে নেতাকর্মীদের ঢাকায় আনতে নানা প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে তারা। একইসঙ্গে মহাসমাবেশ ঘিরে কোনো 'অপ্রত্যাশিত ঘটনা’ ঘটলে সেই পরিস্থিতি মোকাবেলা করার কৌশল নির্ধারণেও কাজ করছেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা।
বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে দেশজুড়ে এরইমধ্যে তৈরি হয়েছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। মহাসমাবেশ থেকেই বিএনপি ১০ বছর আগে হেফাজতের শাপলা চত্বরের মতো কোনো অবস্থান কর্মসূচি কিংবা সারাদেশ থেকে ঢাকাকে বিচ্ছিন্ন বা অবরোধের চেষ্টা করতে পারে বলে শঙ্কা রয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের। সেক্ষেত্রে রাজপথ থেকে তাদের 'বিতাড়িত' করতে কৌশল নির্ধারণেও পরিকল্পনা গোছাচ্ছে আওয়ামী লীগ।
মহাসমাবেশ সফল করতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি বিএনপির: দলীয় সূত্র জানিয়েছে, মহাসমাবেশে বিশাল লোকসমাগমের দিকেই প্রাথমিক নজর বিএনপির শীরর্ষ নেতৃবৃন্দের। তারা আশা করছেন, মহাসমাবেশে রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের জেলা থেকে লোকসমাগম ঘটাতে হবে বেশি। তবে প্রতিটি জেলা-উপজেলা থেকেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নেতা-কর্মী-সমর্থককে রাজধানীতে আনতে সাংগঠনিকভাবে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
জানা গেছে, মহাসমাবেশ সফল করতে এরইমধ্যে স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি জেলায় একজনকে দেওয়া হয়েছে সমন্বয়ের দায়িত্ব।
তবে সরকার পতনের লক্ষ্য অর্জনে মহাসমাবেশ থেকে কী কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হবে, তা এখনো নির্ধারণ করেনি বিএনপি।
শীর্ষ নেতারা বলছেন, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে গণ-অভ্যুত্থান সৃষ্টি করতে চান তারা। তবে সরকার যদি তাদের দলীয় কর্মী বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে সহিংস পরিস্থিতির সৃষ্টি করে, সেই ক্ষেত্রে পাল্টা কর্মসূচি দিতে পারে বিএনপি । তখন হরতাল বা অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচি আসতে পারে।
এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, পরিস্থিতি বুঝে যখন যে কর্মসূচির দরকার মনে হবে, সেই কর্মসূচিই ঘোষণা দেওয়া হবে। ২৮ অক্টোবরের পরিস্থিতিই বলে দেবে, এই সরকারকে হটাতে কোন কর্মসূচি দিতে হবে।
দলের আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, সরকারের কোনো পক্ষ কোন উস্কানি দিয়ে যাতে কোন সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে এবং বিএনপির কেউ সেই ফাঁদে যাতে পা না দেয়, সেটিই নিশ্চিত করাই চ্যালেঞ্জ।
তিনি বলেন, আমাদের মহাসমাবেশ হবে শান্তিপূর্ণ। সারাদেশ থেকে নেতাকর্মীরা ঢাকায় সমাবেশে আসবেন। সরকারও চাইবে উস্কানি দিয়ে কোনো অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটিয়ে বিএনপির ওপর দোষ চাপাতে। এ নিয়ে সতর্ক থাকার নির্দেশনা সবাইকে দেওয়া হয়েছে।
বিএনপিকে হটাতে কোনপথে হাঁটছে আওয়ামী লীগ: এই মুহূর্তে বিএনপির মহাসমাবেশকে ‘সর্বোচ্চ’ গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার ও আওয়ামী লীগ উভয়ই। সূত্র বলছে, বিএনপিকে ঠেকাতে সরকার প্রশাসনিক দিক থেকে এবং আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক দিক থেকে যৌথ পরিকল্পনা করছে। এরইমধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী গ্রেপ্তার অভিযান চালাচ্ছে। তাছাড়া ঢাকার প্রবেশপয়েন্টগুলোতে বসানো হবে কড়া পাহারাও। পরিকল্পনা রয়েছে ঢাকায় প্রবেশ সীমিত করে দেওয়া।
পুলিশ জানিয়েছে, ঢাকার প্রবেশপথগুলোতে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন থাকবে। বিএনপি সহিংসতায় লিপ্ত হলে বা কোথাও অবস্থান নিলে পুলিশও কঠোর হবে।
র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ঢাকার প্রবেশপথ এবং রাজধানীর ভেতরে প্রধান প্রধান পয়েন্টে আমরা পর্যাপ্ত চেকপয়েন্ট বসাবো, যাতে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে কেউ সমাবেশে আসতে না পারে।
বিএনপি যাতে সড়কে কোনো অবস্থান না নিতে পারে, সেজন্যও সতর্ক থাকবে পুলিশ।
এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘বিএনপিকে আগেই বলা হয়েছে সড়কে বড় সমাবেশ না করে কোনো মাঠে গিয়ে করতে। সড়ক দখল করে কোনো বিশৃঙ্খলা তৈরির সুযোগ তাদের দেওয়া হবে না। প্রয়োজনে সড়ক থেকে তুলে দেওয়া হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী সব প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে।
এদিকে আওয়ামী লীগও ঢাকায় ওইদিন বড় সমাবেশের পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে। এর বাইরে ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে সতর্ক পাহারায়ও থাকতে পারে দলীয় নেতাকর্মীরা।
আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানান, বিএনপিকে চাপে রাখতে ২৮ অক্টোবরই ঢাকায় বড় সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ। এছাড়া দরকার হলে সতর্ক পাহারা নামে মিছিলও হতে পারে।
আওয়ামী লীগের ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, আন্দোলনের নামে বিএনপিকে বিশৃঙ্খলা ঘটাতে দেওয়া যাবে না। রাজধানীর প্রবেশমুখসহ নগরীর সর্বত্র আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সজাগ থাকবে। ঢাকায় অনুপ্রবেশকারী বা সন্ত্রাসী অস্ত্রধারী কেউ নজরে এলেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানানো হচ্ছে।
এদিকে ২৮ অক্টোবর বিকেল ৩টায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেটে শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ করার কর্মসূচি নিয়েছে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর আওয়ামী লীগ। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.