আজারবাইজান: আর্মেনিয়া সদিচ্ছা দেখালে শান্তির পথ খোলা

আজারবাইজান জানিয়েছে, আর্মেনিয়ার সঙ্গে একটি শান্তি চুক্তি সম্ভব হবে যদি দেশটি রাজনৈতিক সদিচ্ছা দেখায়। ২৮ ডিসেম্বর, বৃহস্পতিবার আজারবাইজানীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেহুন বায়রামভ রাজধানী বাকুতে চলতি বছরের শেষ সংবাদ সম্মেলনে এই কথা বলেছেন।

জেহুন বায়রামভ

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বায়রামভ বলেছেন, 'আর্মেনিয়ান প্রশাসন যদি রাজনৈতিক সদিচ্ছা দেখায়, তাহলে শান্তির পথ উন্মুক্ত। আমরা দেখব ভবিষ্যতে এই রাজনৈতিক সদিচ্ছা কেমন হবে।'   

আজারবাইজান এবং আর্মেনিয়ার মধ্যে শান্তি আলোচনার ক্ষেত্রে চলতি বছর গুরুত্বপূর্ণ ফলাফল অর্জিত হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন বায়রামভ। তিনি বলেছেন, এটি দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে হয়েছে। এক্ষেত্রে কোনো মধ্যস্থতাকারীর প্রয়োজন হয়নি।  

বায়রামভ জানিয়েছেন, তিনি এবং তার আর্মেনিয়ান প্রতিপক্ষ দুই দেশের সীমান্তে, এমনকি যদি পরিস্থিতি ভাল হয় তবে একে অপরের দেশে দেখা করতে পারেন।

তিনি বলেছেন, ‘কোনো ক্ষেত্রে অগ্রগতি অর্জন করা খুবই কঠিন, কিন্তু এই প্রক্রিয়াটিকে দুর্বল করা সহজ। যে কোনো নেতিবাচক বক্তব্য ক্ষতিকারক। আর্মেনিয়াকে অবশ্যই ইতিবাচক অগ্রগতি চাইলে কথাবার্তার ক্ষেত্রে মনোযোগ দিতে হবে। ইদানীং, আমরা দেশটির কর্মকর্তাদের কাছ থেকে কিছু ইতিবাচক বার্তা শুনতে পাচ্ছি। আমরা আশা করছি, এই ধারা অব্যাহত থাকবে।' 

এদিকে আজারবাইজানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, এখনও দুই দেশের মধ্যে গুরুতর মতবিরোধ রয়েছে। তবে দিন দিন এগুলোর সংখ্যা কমে আসছে।

তিনি আর্মেনিয়ার কাছে ভারতের অস্ত্র বিক্রির বিষয়েও কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, ‘এটিকে শুধু একটি বাণিজ্যিক ইস্যু হিসাবে বিবেচনা করা ঠিক নয়। এই অঞ্চলে দীর্ঘ সময় ধরে সংঘাত ও যুদ্ধ চলেছে। এখন শান্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আর্মেনিয়ায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রতিহিংসাপরায়ণ শক্তি রয়েছে। এই ধরনের পদক্ষেপ এই প্রতিহিংসাপরায়ণ শক্তিকে উৎসাহিত করবে।' 

বায়রামভ যোগ করেছেন, ‘আর্মেনিয়াকে সশস্ত্র করা এই অঞ্চলের জন্য হুমকির একটি নতুন উৎস হতে পারে। এটি এই অঞ্চলের শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য একটি আঘাত হতে পারে। যে দেশগুলো এই অঞ্চলের সঙ্গে ব্যবসা করতে চায়, তাদের আঞ্চলিক দেশগুলোর স্বার্থ বিবেচনা করা উচিত।'  

উল্লেখ্য, দক্ষিণ ককেশাসের এই দেশ দুটি কারাবাখ অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে এক দশক ধরে সংঘর্ষে লিপ্ত রয়েছে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে আর্মেনিয়ান অবৈধ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে অভিযানের মাধ্যমে এই অঞ্চলটি পুনরুদ্ধার করে আজারবাইজান। যদিও আন্তর্জাতিকভাবে কারাবাখ আজারবাইজানের অংশ হিসেবে স্বীকৃত, কিন্তু এতদিন ধরে এই অঞ্চলটি বিচ্ছিন্নতাবাদীরা দখল করে রেখেছিল।

সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি