‘রামপাল বিরোধীদের রয়েল বেঙ্গল টাইগারদের সঙ্গে দেখা করা উচিত’

রামপাল বিরোধীদের রয়েল বেঙ্গল টাইগারদের সঙ্গে দেখা করে কথা বলা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, তাদের উচিত বাঘের সাথে কথা বলে রামপালের জন্য বাঘদের কোনো সমস্যা হচ্ছে কিনা তা জেনে নেয়া।

আজ চট্টগ্রামে ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ -এর ৫৭তম কনভেনশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেয়া এক বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ মন্তব্য করেন।

বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী রামপাল বিরোধীদের উদ্দেশ করে বলেন, তাদের মানুষের জন্য কোনও দুঃখ নাই। তাদের উচিত রয়েল বেঙ্গল টাইগারের সাথে কথা বলে তাদের কোনো সমস্যা হচ্ছে কিনা জেনে নেয়া

রামপালের কারণে সুন্দরবন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে সর্বাধুনিক আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। পরিবেশের কোনও ক্ষতি হওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। এছাড়া এই কেন্দ্র সুন্দরবন থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।

পরিবেশের কথা চিন্তা করে রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পের আশেপাশে পাঁচ লাখ গাছ লাগানো হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, এরই মধ্যে দেড় লাখ গাছ লাগানো হয়ে গেছে। এ সময় তিনি আশ্বাস দিয়ে বলেন, এই প্রকল্পটির কারণে সুন্দরবনের কোনও ক্ষতি হবে না।

প্রধানমন্ত্রী দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে আপত্তি তোলা হচ্ছে। অথচ রামপালের প্রস্তাবিত এলাকা সুন্দরবন থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে পশুর নদীর তীরে ডোবা ভরাট করে নির্মাণ করা হচ্ছে। ইউনেস্কো ঘোষিত ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ যে জায়গায় অবস্থিত, তার থেকে ৬৫-৭০ কিলোমিটার দূরে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অবস্থান। তাই এই প্রকল্পের কারণে সুন্দরবনের কোনও ক্ষতি হবে না।

পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাবের কথা চিন্তা করে এই প্রকল্পে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এই প্রকল্পে যে চিমনি ব্যবহার করা হবে তা সর্বোচ্চ উচ্চতার। এখান থেকে যে ছাই উৎপন্ন হবে তা সিমেন্ট কারখানাগুলো কিনে নেবে। এখানে কয়লা আনা হবে ঢাকনাযুক্ত কন্টেইনারে।

তিনি আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন রাখেন, গত বছর শ্যালা নদীতে যে দুর্ঘটনা ঘটেছিলো তাতে ওই এলাকার কতটুকু ক্ষতি হয়েছে? তিনি বলেন, আন্দোলনকারীরা কি রামপালে গিয়েছে? তারা ঢাকায় বসে আন্দোলন করে, জীবনেও রামপালে যায় নাই। তিনি আন্দোলনকারীদেরকে সশরীরে গিয়ে রামপাল আর সুন্দরবনের দূরত্ব দেখে আসার আহ্বান জানান।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী দিনাজপুরের বড় পুকুরিয়ার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উদাহরণ টেনে বলেন, বড় পুকুরিয়ায় যদি পরিবেশের ক্ষতি না হয় তাহলে রামপালে আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তির বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কেন পরিবেশের ক্ষতি হবে?