এরদোয়ানের সফর ইরাক-তুরস্ক নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করবে

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান একটি দীর্ঘ প্রতীক্ষিত সফরে ২২ এপ্রিল, সোমবার ইরাকের রাজধানী বাগদাদ পৌঁছেছেন। ২০১১ সালের পর এটি তুর্কি নেতার প্রথম ইরাক সফর ছিল। তার এই সফরটি দুই দেশের নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শিয়া আল-সুদানি এবং তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান

সোমবার বাগদাদে ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শিয়া আল-সুদানির সঙ্গে একটি যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন এরদোয়ান। সে সময় তিনি বলেছেন, 'আমি বিশ্বাস করি ইরাকে কুর্দি বিচ্ছিন্নতাবাদী পিকেকের উপস্থিতি শেষ হবে। তুরস্ককে লক্ষ্য করে সন্ত্রাসী এই সংগঠনের সম্প্রসারণের বিরুদ্ধে আমরা যে যৌথ পদক্ষেপ নিতে পারি তা নিয়ে আলোচনা করেছি।'  

এদিকে ইরাকি প্রধানমন্ত্রী সুদানি বলেছেন, 'দুই দেশ নিরাপত্তা, বাণিজ্য ও জ্বালানি শক্তির বিষয়ে একটি কৌশলগত কাঠামো চুক্তিতে সম্মত হয়েছে। সেইসঙ্গে পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনার বিষয়ে ১০ বছরের একটি চুক্তিতে সম্মত হয়েছে যা ইরাকের চাহিদা বিবেচনা করবে।'  

তিনি আরও বলেছেন, ‘দুই দেশ সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করতে এবং সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে কাজ করে এমন অরাষ্ট্রীয় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে পরস্পরকে সহযোগিতা করবে।'  এক্ষেত্রে তিনি পিকেকের নাম উল্লেখ করেননি।  

ইরাকি সরকারের একজন মুখপাত্র বলেছেন, পিকেকে সদস্যরা যতক্ষণ পর্যন্ত রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় না হয় কিংবা অস্ত্র বহন না করে ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের ইরাকে স্বাগত জানানো হবে। তবে তিনি এই বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি।

১৯৮৪ সালে তুর্কি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছিল পিকেকে সদস্যরা। আঙ্কারা এবং তার পশ্চিমা মিত্ররা এটিকে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। ২০১৯ সাল থেকে তুরস্ক এই গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে উত্তর ইরাকে আন্তঃসীমান্ত অভিযান পরিচালনা করে আসছে।  

তুরস্ক চলতি বছর এই বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে একটি নতুন অভিযানের পরিকল্পনা করেছে। তুর্কি কর্মকর্তারা একটি যৌথ অভিযানের জন্য ইরাকি সহযোগিতা চেয়েছে। 

এরদোয়ান ইরাকের সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ কুর্দি কর্মকর্তা ইরাকি প্রেসিডেন্ট আবদুল লতিফ রশিদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। এরপর তুর্কি প্রেসিডেন্টের কার্যালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘ইরাককে অবশ্যই সব ধরনের সন্ত্রাস নির্মূল করতে হবে।' 

উল্লেখ্য, ইরাক সাম্প্রতিক মাসগুলোতে পিকেকে সম্পর্কে তুরস্কের উদ্বেগগুলোকে প্রশমিত করার চেষ্টা করছে। কারণ ইরাকের ক্রমবর্ধমান খরার মধ্যে টাইগ্রিস এবং ইউফ্রেটিস নদীর পানির ন্যায্য ভাগের বিষয়ে তুরস্কের সহযোগিতা চায় দেশটি।

সূত্র: রয়টার্স