ফখরুল: ভারত বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছে

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বৃহস্পতিবার অভিযোগ করেছেন যে, ভারত বাংলাদেশের সাথে অভিন্ন নদীর পানি বণ্টনের সমস্যা সমাধান না করে বরং বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণে রাখার অপচেষ্টা করছে।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ফাইল ছবি

ফরাক্কা লংমার্চ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি আওয়ামী লীগ সরকারকে ভারতের সাথে পানি সমস্যা সমাধানে ব্যর্থতার জন্য সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আছে শুধুমাত্র তার বিদেশি প্রভুর স্বার্থ রক্ষা করার জন্য।

‘আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, আমাদের প্রতিবেশী (ভারত) সবসময় বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। শুধু ফারাক্কা বাঁধ নয়, গঙ্গার পানি নয়, তারা ১৫৪টি অভিন্ন নদীর পানি বণ্টনে সবসময় অবহেলা করে আসছে। তারা সমস্যার সমাধান করছে না,’ বলেন ফখরুল।

তিনি উল্লেখ করেন যে, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার দীর্ঘদিন ধরে তিস্তা পানি বণ্টন চুক্তি করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছে কিন্তু কোনো ফল পাচ্ছে না।

‘এই ব্যর্থতার মূল কারণ হলো, এটি সম্পূর্ণরূপে একটি পরাধীন সরকার। এটি জনগণের স্বার্থে অবস্থান নিতে সবসময় ব্যর্থ হয়েছে কারণ তারা ভারতের সাথে আচরণে অত্যন্ত দুর্বল।’

ভাসানী অনুসারী পরিষদ ঐতিহাসিক ‘ফরাক্কা লংমার্চ দিবস’ উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবে এই কর্মসূচির আয়োজন করে।

১৯৭৬ সালের ১৬ মে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ভারতের ফরাক্কা বাঁধের দিকে রাজশাহী থেকে একটি বিশাল লংমার্চের নেতৃত্ব দেন। তিনি ভারত সরকার কর্তৃক গঙ্গার পানির প্রবাহ ভারতের অভ্যন্তরে নিয়ে যাওয়ার জন্য নির্মিত এই বাঁধের ধ্বংসের দাবি জানান।

ফখরুল বলেন, বর্তমান সরকারের একমাত্র কাজ হলো দেশের জনগণকে দমন করে নিজেদের এবং তাদের প্রভুদের স্বার্থ রক্ষা করা।

‘তারা (আওয়ামী লীগ সরকার) কীভাবে তিস্তা ও ফরাক্কার সমস্যা সমাধান করবে? তারা কীভাবে অন্যান্য অভিন্ন নদীর পানি বণ্টনের সমস্যা সমাধান করবে? কারণ তারা বিশেষ দায়িত্ব নিয়ে ক্ষমতা দখল করেছে (অন্যদের দ্বারা),’ তিনি মন্তব্য করেন।

এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের জনগণকে তাদের হারানো গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পেতে নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে বলেও মনে করেন বিএনপি নেতা।

তিনি বলেন, ‘বিএনপি এবং অন্যান্য অনেক বিরোধী দল জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। এর জন্য আমাদের অনেকেই জীবন দিয়েছেন এবং আমাদের অনেককেই নিপীড়ন ও নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে।’

ফখরুল আরও বলেন, বর্তমান দানবীয় সরকারকে উৎখাত করার জন্য সব বিরোধী দলের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন ছাড়া এখন আর কোনো বিকল্প পথ নেই।

“আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য আমাদের নিজেদের স্বার্থে একসঙ্গে এগিয়ে যেতে হবে। কেউ আমাদের জন্য এটা করবে না; আমাদের এটা নিজেদেরই করতে হবে।’

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ জানে যে একটি অবাধ, নিরপেক্ষ এবং বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনে তারা বিশাল পরাজয়ের সম্মুখীন হবে। তাই তারা বিভিন্ন কৌশলে নির্বাচনকে কারচুপি করে ক্ষমতায় টিকে আছে।