রাষ্ট্রপতি: রাষ্ট্রে কেউ যেন বৈষম্যের শিকার না হন

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে কেউ যেন বৈষম্যের শিকার না হন, সেদিকে সরকারের পাশাপাশি নাগরিক সমাজকেও কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, নাগরিকদের প্রতি যেকোনো ধরনের বৈষম্য আইনের শাসনের পরিপন্থি। কাজেই রাষ্ট্রে কেউ যেন বৈষম্যের শিকার না হন।

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন

শনিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির অষ্টম জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। রাষ্ট্রপ্রধান স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ন রেখে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে এবং সর্বস্তরে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ছড়িয়ে দিতে ৭১-এর পরাজিত শক্তির বিরুদ্ধে সর্বাত্মক প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যাতে স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ধারণ করে বেড়ে উঠতে পারে, সে লক্ষ্যে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার গুরুত্বারোপ করেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সব শক্তির ইস্পাতকঠিন ঐক্যের বিকল্প নেই। ব্যক্তি ও গোষ্ঠী স্বার্থ ভুলে দেশ ও জনগণের স্বার্থে কাজ করতে হবে সবাইকে।

রাষ্ট্রপতি সবাইকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, বঙ্গবন্ধুর দর্শন, ধর্মনিরপেক্ষতা ও অসাম্প্রদায়িকতার বোধকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ারও তাগিদ দেন। তরুণদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ডিজিটাল মাধ্যমকে ইতিবাচকভাবে ব্যবহার করুন। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পড়ুন, বঙ্গবন্ধুর জীবনী ও আদর্শ সম্পর্কে জানুন। মননে, বোধে, জীবনাচরণে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে বুকে লালন করে বাঙালির গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরুন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরও ঘাতক-দালাল চক্র মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনাসহ আমাদের সাফল্যকে ম্লান করে দিতে অবিরাম অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যুদ্ধাপরাধী বা মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার কাজ সম্পন্ন হলেও ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির কাজ কখনো শেষ হবে না। স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে যেকোনো ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির ভূমিকা ভবিষ্যতেও কার্যকর থাকবে।

প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের বিভিন্ন সাফল্যের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশের পথে যাত্রা শুরু করেছি আমরা। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ আর্থসামাজিক ও তথ্য-প্রযুক্তির নানা সূচকে বিশ্বদরবারে উজ্জ্বল দৃষ্টান্তে পরিণত হয়েছে।

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির অষ্টম জাতীয় সম্মেলনের সভাপতি শাহরিয়ার কবির, সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলিম ও সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক কাজী মুকুল বক্তব্য দেন।