বেইজিংয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চার দিনের দ্বিপাক্ষিক সফরে সোমবার বেইজিং পৌঁছেছেন। চীনা প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে তিনি সেখানে গেছেন। এই সফরে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বিদ্যমান কৌশলগত অংশীদারিত্বকে সার্বগ্রাহী কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্বে উন্নীত করার কথা রয়েছে।

ছবি - সংগৃহীত

প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইট (বিজি১৭০১) স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায় বেইজিং ক্যাপিটাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এর আগে ফ্লাইটটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে।

৮ থেকে ১১ জুলাই বেইজিং সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে এক বৈঠকে মিলিত হবেন। এছাড়াও ১০ জুলাই তিনি তার চীনা প্রতিপক্ষ লি কেকিয়াংয়ের সঙ্গে প্রতিনিধি পর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসবেন।

প্রধানমন্ত্রীর এই সফরে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে ২০ থেকে ২২টি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

রবিবার (গতকাল) রাজধানীর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ বলেন, ‘অর্থনৈতিক ও ব্যাংকিং খাতে সহযোগিতা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, ডিজিটাল অর্থনীতি, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সহায়তা, ষষ্ঠ ও নবম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু নির্মাণ, বাংলাদেশ থেকে কৃষিপণ্য রপ্তানি এবং জনগণের সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধির বিষয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হতে পারে।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও জানান, সফরকালে দুই দেশের বেশ কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধনের ঘোষণা দেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের অক্টোবরে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বাংলাদেশ সফর করেছিলেন। ওই সময় দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক কৌশলগত অংশীদারিত্বে উন্নীত হয়।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বশেষ ২০১৯ সালের জুলাই মাসে বেইজিং সফর করেছিলেন। এর আগেও তিনি বহুবার চীন সফর করেছেন।

উল্লেখ্য যে, আগামী বছর দুই দেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই চীন সফরটি তার সর্বশেষ ভারত সফরের (২১-২২ জুন) মাত্র ১৫ দিনের ব্যবধানে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

৯ জুলাই, শেখ হাসিনার চীন সফরের দ্বিতীয় দিনে, এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংকের (এআইআইবি) সভাপতি জিন লিকুন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করবেন।

পরে প্রধানমন্ত্রী চীনের বেইজিংয়ে চায়না ওয়ার্ল্ড সামিট উইং, শাংগ্রি-লা সার্কেলে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য, ব্যবসা ও বিনিয়োগ সুযোগ নিয়ে আয়োজিত এক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন।

দুপুরে বেইজিংয়ের গ্রেট হল অফ দ্য পিপলে প্রধানমন্ত্রী ও চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। পরে প্রধানমন্ত্রী তিয়েনআনমেন স্কোয়ারে 'পিপলস হিরোস'-এর স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।

সন্ধ্যায়, তিনি বেইজিংয়ের বাংলাদেশ হাউসে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আয়োজিত নৈশভোজে অংশ নেবেন।

১০ জুলাই, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াংয়ের নেতৃত্বে প্রতিনিধি পর্যায়ের একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। গ্রেট হল অফ দ্য পিপলে আয়োজিত এই বৈঠকে বেশ কয়েকটি নথিতে স্বাক্ষর করা হবে, যার মধ্যে রয়েছে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ)।

পরে তিনি একই স্থানে চীনা প্রধানমন্ত্রীর আয়োজনে একটি স্বাগত ভোজে অংশ নেবেন।

১০ জুলাই দুপুরে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বেইজিংয়ের গ্রেট হল অফ দ্য পিপলে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।

চীন সফর শেষে ১১ জুলাই স্থানীয় সময় সকাল ১১টায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইটে (বিজি১৭০৪) শেখ হাসিনা বেইজিং ক্যাপিটাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করবেন।

একই দিন বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টায় ফ্লাইটটি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করার কথা রয়েছে।