সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা বাতিলের দাবিতে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো সোমবার ‘বাংলা অবরোধ’ কর্মসূচি পালন করে চার ঘণ্টা পর অবরোধ তুলে নিয়েছেন শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা। এর আগে ২০১৮ সালে সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা বাতিল করে যে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছিল, তা পুনর্বহালসহ চার দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে তারা এ কর্মসূচি পালন করেন।

anti quota protestorsছবি - সংগৃহীত

সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আন্দোলনকারীরা অবরোধ তুলে নেওয়ার পর শাহবাগ মোড়ে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

আন্দোলনকারীরা মঙ্গলবার গণসংযোগ পালনের পাশাপাশি ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন ও ছাত্র ধর্মঘট পালনের ঘোষণা দিয়েছেন। তারা বুধবারও অবরোধ কর্মসূচি পালনের পরিকল্পনা করছেন, তবে কর্মসূচির বিস্তারিত জানানো হবে মঙ্গলবার।

এদিকে, শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা তাদের এক দফা দাবিতে বলেছেন, সংবিধান অনুযায়ী পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য সর্বনিম্ন কোটা ব্যতীত, সরকারি চাকরির সকল স্তরে সকল বৈষম্যমূলক ও অযৌক্তিক কোটা বাতিল করে জাতীয় সংসদে আইন প্রণয়ন করতে হবে।

এর আগে সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের’ ব্যানারে আন্দোলনকারীরা রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক শাহবাগ, বাংলা মোটর, ফার্মগেট এবং গুলিস্তানের জিরো পয়েন্ট অবরোধ করে রাখে। এতে রাজধানীর বিস্তীর্ণ এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

বিকেল ৩টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে আন্দোলনকারীরা জমায়েত হতে থাকে। বেলা ৩টা ১৫ মিনিটের দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাতটি বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের প্ল্যাটফর্ম গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের নেতা-কর্মীরা টিএসসি থেকে মিছিল নিয়ে সেখানে যোগ দেন।

যদিও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ছোট ছোট মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসের মধুর ক্যান্টিনে জড়ো হন, তারা কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের বাধা দেননি।

২০১৮ সালের আন্দোলনের পর প্রথমবারের মতো বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলো সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে আন্দোলনে যোগ দেয়।

আন্দোলনকারীরা শাহবাগ মোড় অবরোধ করে কোটা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।

অবরোধ তুলে নেওয়ার সময় ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের’ সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা আধাবেলা অবরোধ করতে থাকব। আমরা পূর্ণাঙ্গ অবরোধের পরিকল্পনা করছি। এজন্য আগামীকাল (মঙ্গলবার) সারাদেশের শিক্ষার্থীদের সাথে গনসংযোগ ও সমন্বয় করা হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘পরে আমরা বুধবারের জন্য কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করব। কিন্তু চলমান ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি চলবে। আমরা অবরোধ প্রত্যাহার করছি না, বরং পূর্ণাঙ্গ অবরোধের প্রস্তুতি নিচ্ছি। মঙ্গলবার দুপুরে এক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আমরা সকলকে বুধবারের কর্মসূচি সম্পর্কে জানিয়ে দেবো।’

তিনি দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অবরোধ বাস্তবায়নের জন্য সকলকে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান।

চার দফা দাবীর পরিবর্তে, নাহিদ ইসলাম এদিন এক দফা দাবির কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, সংবিধান অনুযায়ী পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য সর্বনিম্ন কোটা ব্যতীত, সরকারি চাকরির সকল স্তরে সকল বৈষম্যমূলক ও অযৌক্তিক কোটা বাতিল করে জাতীয় সংসদে আইন প্রণয়ন করতে হবে।

নাহিদ বলেন, ‘আমরা আমাদের এক দফা দাবি উত্থাপন করেছি যেখানে আদালতের কোন এখতিয়ার নেই। এটি শুধুমাত্র নির্বাহী বিভাগ ও সরকারের দায়িত্ব। বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে সরকারের ওপর নির্ভর করে। এখন আদালতকে দেখানোর কোনো মানে হয় না। সরকারই কেবল আন্দোলনের গতিপথ নির্ধারণ করতে পারে।’

এদিকে, সোমবার ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ৬৫ সদস্যের একটি সমন্বয় টিম গঠন করেছে।

এ বিষয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা চাই না আন্দোলন দীর্ঘস্থায়ী হোক। তাই আমরা এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক কমিটি গঠন করিনি। তবে আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাস্তায় থাকার জন্য আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। সারাদেশের প্রতিনিধিদের নিয়েই আমরা এই টিম গঠন করেছি।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো হলের শিক্ষার্থীদের যদি আন্দোলনে যোগদানে বাধা প্রদান করা হয় তাহলে ব্যবস্থা নেওয়ার সতর্কতা দেন নাহিদ।

এসময় ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের’ নেতা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সারজিস আকম, হাসনাত আব্দুল্লাহ, আবু বকর মজুমদার, মাহিন সরকার, রিফাত রশিদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.