দ্বিতীয় স্ত্রীর কাছে পালিয়ে গেলেন ৪০০ কোটির সেই আলোচিত পিয়ন!

৪০০ কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়া আলোচিত সেই পিয়ন জাহাঙ্গীর আলম যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে গেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের সূত্র ধরে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হলে রোববার (১৪ জুলাই) রাতে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। তার বড় ভাই মো. মীর হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জাহাঙ্গীর আলম

জানা গেছে, চাটখিল উপজেলার খিলপাড়া ইউনিয়নের নাহারখিল গ্রামে জাহাঙ্গীরের চারতলা বাড়ি রয়েছে। দোতলা ও তিনতলায় জাহাঙ্গীর থাকতেন। এখন সেখানকার সব তলাই তালাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে।

নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার খিলপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জাহাঙ্গীরের ভাই মীর হোসেন জানান, জাহাঙ্গীর দুই বিয়ে করেছে। তার প্রথম স্ত্রীর ঘরে এক সন্তান আর দ্বিতীয় স্ত্রীর ঘরে তিন সন্তান রয়েছে। প্রথম স্ত্রী দেশে থাকলেও তবে তার সঙ্গে জাহাঙ্গীরের যোগাযোগ নেই। দ্বিতীয় স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করে। রোববার রাতে জাহাঙ্গীর তাদের কাছেই চলে গেছে।

মীর হোসেন আরও বলেন, এতদিন আমরা জানতাম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে খুবই ভালো সম্পর্ক তার। কিন্তু রোববার প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনে ৪০০ কোটি টাকার মালিক হয়ে যাওয়া পিয়নের কথা শুনে আমরা হতভম্ব হয়ে পড়ি। এর পরপরই এলাকায় বিষয়টি নিয়ে কানাঘুষা শুরু হয়। সে সময় পর্যন্ত জাহাঙ্গীর দেশেই ছিল। রাতে শুনতে পাই, সে যুক্তরাষ্ট্রে চলে গেছে। তার সব মোবাইল নাম্বারই বন্ধ থাকায় তার সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি।

গত রোববার বিকালে গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একপর্যায়ে বলেন, আমার বাসায় কাজ করেছে, পিয়ন ছিল। সেও নাকি এখন ৪০০ কোটি টাকার মালিক। হেলিকপ্টার ছাড়া সে চলে না। তার এই দুর্নীতির কথা জানতে পারার পরই ব্যবস্থা নিয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী তার বক্তৃতায় ওই পিয়নের পরিচয় প্রকাশ না করলেও বিভিন্ন সূত্রে প্রকাশ পায়, আলোচিত সেই পিয়নের নাম জাহাঙ্গীর আলম। তিনি প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মচারী হিসেবে ২০০৯-১৮ পর্যন্ত দুই মেয়াদের পুরোটা সময় এবং এরপরও কিছু সময় দায়িত্ব পলন করেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রী বিরোধী দলে থাকার সময়ও জাহাঙ্গীর তার বাসভবন সুধা সদনে ব্যক্তিগত স্টাফ হিসেবে কাজ করেছেন।

দীর্ঘদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত কর্মচারী হিসেবে দায়িত্ব পালনের সুবাদে একসময় নিজের পরিচয় দিতে শুরু করেন প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত বিশেষ সহকারী হিসেবে। এই পরিচয় ব্যবহার করে তিনি নিয়মিত সচিবালয়সহ বিভিন্ন স্থানে তদবির বাণিজ্য করে প্রচুর অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। একইভাবে তিনি নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতির পদও বাগিয়ে নিয়েছিলেন।

একটি সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর জাহাঙ্গীর বুঝতে পারেন, যে কোনো সময় তাকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে। তাই তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন।

তবে জাহাঙ্গীরের শুভাকাক্সক্ষী অনেকে দাবি করছেন, প্রধানমন্ত্রীর সেই পিয়ন এই জাহাঙ্গীর নন। আর এই জাহাঙ্গীর দুই সপ্তাহ আগেই যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছেন। আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন, দেখা করছেন। সেগুলো আবার ফেসবুকে দেওয়া হচ্ছে।