তথ্য প্রতিমন্ত্রী: ভাঙচুরের দায় সন্ত্রাসীদের, শিক্ষার্থীদের হয়রানি করা হবে না
- Details
- by নিজস্ব প্রতিবেদক
তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত আজ বলেছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে কেবল সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধেই সুনির্দিষ্ট প্রমাণের ভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কোনো নির্দোষ শিক্ষার্থীকে হয়রানি করা হবে না।
মোহাম্মদ আলী আরাফাত
‘আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, কেবলমাত্র সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধেই আইনের প্রয়োগ করা হবে সুনির্দিষ্ট প্রমাণের ভিত্তিতে।... আমরা স্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছি, কোনো নির্দোষ শিক্ষার্থী যেন হয়রানির শিকার না হয়,’ আজ বিকেলে সচিবালয়ে তার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
কেবলমাত্র যাদের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার প্রমাণ মিলবে তাদেরকেই গ্রেফতার করা হবে উল্লেখ করে আরাফাত বলেন, শুরু থেকেই সরকার শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা দিয়ে আসছে এবং কখনও তাদের ওপর ভাঙচুরের দায় চাপায়নি।
‘আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের আবেগ ও অনুভূতির প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা আছে। আমরা ভাঙচুরের দায়ভার সন্ত্রাসীদের ওপর চাপিয়েছি। বিষয়টি সকলের কাছে স্পষ্ট হওয়া উচিত,’ তিনি বলেন।
প্রতিমন্ত্রী পুলিশ প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান, যাতে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া, স্লোগান দেওয়া এবং বিক্ষোভকারীদের পানি সরবরাহ করা শিক্ষার্থী এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা যেন কোনো ধরনের হয়রানির শিকার না হন।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে প্রতিটি হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক ও নিন্দা জ্ঞাপন করে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে গঠিত স্বাধীন বিচার বিভাগীয় কমিশনের মাধ্যমে সকল মৃত্যুর বিচার নিশ্চিত করতে সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
আরাফাত বলেন, কমিশন স্বাধীনভাবে প্রতিটি হতাহতের ঘটনার তদন্ত করবে এবং দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনবে।
‘প্রয়োজনে, তদন্ত প্রক্রিয়ায় ফরেনসিক পরীক্ষা এবং ময়নাতদন্তের জন্য আমরা বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সহায়তা নেব কারণ আমরা শতভাগ স্বচ্ছতা নিশ্চিত এবং জবাবদিহি নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ,’ তিনি আরও বলেন।
ঘটনার শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাতের প্রসঙ্গ টেনে প্রতিমন্ত্রী বলেন, তিনি ব্যক্তিগতভাবে আবু সাঈদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছেন।
আরাফাত বলেন, আবু সাঈদের পরিবার ন্যায়বিচার ছাড়া আর কিছুই চায় না।
‘(জবাবে) আমি তাদের বলেছি, আপনারা হলেন এ ঘটনার প্রথম শিকার। আর আমরাও একইভাবে প্রতিটি হতাহতের ঘটনার শিকার, কারণ এসব মৃত্যুকে কেন্দ্র করে দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে,’ তিনি বলেন।
তাদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে বলে তিনি তাদের আশ্বস্ত করেছেন।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় সংঘটিত ভাঙচুর সম্পর্কে আরাফাত বলেন, বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে হামলার ধরন ছিল জঙ্গি হামলার মতো। কারণ জেলগেট ভেঙে উচ্চ পর্যায়ের জঙ্গিসহ বন্দীদের বের করে আনা এবং অস্ত্র ও গোলাবারুদ লুট করা কখনও শিক্ষার্থীদের কাজ হতে পারে না।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, মেট্রো স্টেশন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবন, সেতু ভবন এবং টোল প্লাজায় হামলা ছাত্রদের কাজ নয় বরং এগুলো পরিচালিত হয়েছে অনুপ্রবেশকারী তৃতীয় পক্ষের দ্বারা।
‘তারা (তৃতীয় পক্ষ) উত্তেজনা বৃদ্ধি করার জন্য আরও বেশি হতাহতের চেষ্টা করেছিল যাতে তারা মরা গাঙে মাছ শিকার করতে পারে। কিন্তু তারা সরাসরি এটি করেনি, বরং তারা শিক্ষার্থীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে এবং তাদের আবেগ ও অনুভূতির অপব্যবহার করেছে,’ তিনি আরও বলেন।
সরকার কখনই কোনো প্রাণহানি চায়নি উল্লেখ করে আরাফাত বলেন, পুলিশ, র্যাব এবং বিজিবির কোনো সদস্যকে গুলি চালাতে দেওয়া হয়নি, তাদের দেশের সংবিধান অনুযায়ী কাজ করতে হয়েছে।
‘কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু সদস্য মাঠ পর্যায়ে আইন ভঙ্গ করতে পারে। স্বাধীন বিচারিক তদন্তের পর তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে,’ তিনি আরও বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, যারা এখনও রাস্তায় গান গেয়ে এবং স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছে, তাদের আবেগের প্রতিও সরকার শ্রদ্ধাশীল।
‘কিন্তু আমরা তাদের কাছে অনুরোধ করতে চাই, তারা যেন দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করে যাতে তৃতীয় পক্ষ তাদের বিক্ষোভে অনুপ্রবেশ করে পুনরায় ভাঙচুর চালাতে না পারে কারণ তারা (তৃতীয় পক্ষ) দেশকে অরাজক পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দেওয়ার জন্য অন্ধকারে লুকিয়ে আছে’ তিনি আরও বলেন।
প্রতিমন্ত্রী ১৬ জুলাই জাতির উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণের কথা উল্লেখ করেন, যেখানে তিনি সেদিন ছয় জনের মৃত্যুর ঘটনায় বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠন এবং শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণের আশ্বাস সহ বেশ কিছু প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
‘প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে জাতির কাছে যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তার পর যদি আমরা ধৈর্য ধরতে পারতাম, তাহলে তৃতীয় পক্ষ বাকি মৃত্যুর ঘটনা ঘটানোর জন্য অনুপ্রবেশ করতে পারত না,’ আরাফাত বলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘অতএব, ভবিষ্যতে যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে আমি সকলের প্রতি ধৈর্য ধরে কাজ করার, আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখার এবং যুক্তি দিয়ে চিন্তা করার আহ্বান জানাচ্ছি।’
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.