আওয়ামী লীগের ২৩ নেতাকর্মী নিহত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিন রোববার (৪ আগস্ট) সারাদেশে ব্যাপক সংঘর্ষ ও সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে। এতে আওয়ামী লীগের ২৩ নেতাকর্মীসহ শতাধিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এছাড়া আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী-এমপিসহ নেতাকর্মীদের বাড়িঘর ও দলীয় কার্যালয়েও ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ

সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার ধানগড়া বাজারে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের সামনে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে পাঁচ আওয়ামী লীগ নেতা নিহত হয়েছেন। তারা হলেন ব্রহ্মগাছা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা ও চেয়ারম্যান গোলাম সরোয়ার লিটন, তার ভাই যুবলীগ নেতা গোলাম হাসনাত টিটো, রায়গঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মেহেদী হাসান ইলিয়াস, সাধারণ সম্পাদক আলামিন হোসেন ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম।

রংপুর শহরে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে আওয়ামী লীগের তিন নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন। তারা হলেন, মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা ও সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর হারাধন রায় এবং যুবলীগ কর্মী খসরু ও মাসুম।

নরসিংদীর মাধবদীতে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে আওয়ামী লীগের ছয় নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন। জানা গেছে, রোববার দুপুরে মাধবদী বাজার বড় মসজিদ এলাকায় আন্দোলনকারী ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। একপর্যায়ে আওয়ামী লীগের জমায়েতের দিক থেকে গুলি করা হলে আন্দোলনকারীরা গুলি উপেক্ষা করে তাদের পাল্টা ধাওয়া দেয়। এ সময় আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতাকর্মী মাধবদী বাসস্ট্যান্ডের পশ্চিম দিকের বড় মসজিদে আশ্রয় নেন। আন্দোলনকারীরা তাদেরকে সেখান থেকে বের করে এনে গণপিটুনি দিলে ঘটনাস্থলেই ছয়জনের মৃত্যু হয়।

নিহতরা হলেন চরদিগলদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের ছোট ভাই যুবলীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন, জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য শ্রমিক লীগ নেতা মনিরুজ্জামান ভূঁইয়া ওরফে নাতি মনির, শ্রমিক লীগ নেতা আনিছুর রহমান সোহেল, মাধবদী পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর নওশের ও অজ্ঞাত এক যুবলীগ কর্মী।

কিশোরগঞ্জে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের এক পর্যায়ে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটুর বাসায় আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। সেই আগুনে পুড়ে অঞ্জনা বেগম (৩২) ও তার সাত বছরের কন্যাশিশু মারা গেছে। এ ঘটনাস্থলের কাছাকাছি এলাকায় সদর উপজেলার কর্শ্বাকড়িয়াল ইউনিয়ন যুবলীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মবিনকেও কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

লক্ষ্মীপুরে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের ছয় নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন। তবে তাদের পূর্ণ পরিচয় জানা যায়নি।

এছাড়া চলমান সহিংসতায় ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য আনোয়ারুল ইসলাম নিহত হয়েছেন।