রূপপুর প্রকল্প: রাশিয়া বলছে, ‘মিথ্যা খবর’ ছড়ানো হচ্ছে

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পে (রূপপুর প্রকল্প) দুর্নীতির যেসব ‘মিথ্যা খবর’ ছড়ানো হচ্ছে তার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে রাশিয়া। মস্কোর দাবি, যারা এ ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে তারা আসলে এই গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পকে বিতর্কিত করতে এবং ঢাকা-মস্কোর মধ্যকার স্থিতিশীল ও পারস্পরিকভাবে লাভজনক সম্পর্ক নষ্ট করার অপচেষ্টা করছে।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র

বুধবার রাশিয়ান দূতাবাসের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘রূপপুর প্রকল্পে দুর্নীতির যেসব মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য বাংলাদেশের গণমাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে তা আমাদের নজরে এসেছে। রোসাটম স্টেট কর্পোরেশন এর আগে দু'বার সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এসব ভিত্তিহীন অভিযোগ অস্বীকার করেছে।’

রাশিয়ান দূতাবাস আরও জানায়, বিষয়টি নিয়ে আরও ভিত্তিহীন জল্পনা বন্ধ করার জন্য রাশিয়ান রপ্তানি ঋণের ব্যবহার পদ্ধতি এবং রূপপুর প্রকল্প নির্মাণে ইতিমধ্যে ব্যয় করা অর্থের পরিমাণ স্পষ্ট করা প্রয়োজন।

জানা গেছে, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ পর্যন্ত রূপপুর প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য রাশিয়া বাংলাদেশকে রাষ্ট্রীয় রপ্তানি ঋণ হিসেবে যে ১১.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রদান করেছে, তার প্রায় ৭.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যবহার করা হয়েছে।

দুটি পৃথক চুক্তির আওতায় এই অর্থ স্থানান্তর করা হয়েছে

১৫ জানুয়ারি, ২০১৩ তারিখে স্বাক্ষরিত প্রথম চুক্তির আওতায় ৪৯১.৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। (এই ঋণের পরিমাণ ছিল সর্বোচ্চ ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং এর মেয়াদ ২০১৭ সালে শেষ হয়েছে)।

২৬ জুলাই, ২০১৬ তারিখে স্বাক্ষরিত দ্বিতীয় চুক্তির আওতায় ৭.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

দ্বিতীয় রপ্তানি ঋণের পুরো অর্থের পরিমাণ ১১.৩৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যার মধ্যে ৬৪ শতাংশ ইতিমধ্যেই ব্যবহার করা হয়েছে এবং এর মেয়াদ ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ সালে শেষ হবে।

রাশিয়ান দূতাবাস জানায়, রাশিয়ান ফেডারেশনের আইন অনুসারে, যেকোনো রাষ্ট্রীয় রপ্তানি ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে সার্বভৌম ঋণগ্রহীতার কাছে সরাসরি অর্থ স্থানান্তর করা হয় না।

রপ্তানি চুক্তির আওতায় বিদেশি গ্রাহককে যেকোনো পণ্য, কাজ বা পরিষেবা সরবরাহের জন্য অর্থায়ন রাশিয়ান মুদ্রায় (রুবেল) সরাসরি সংশ্লিষ্ট রাশিয়ান রপ্তানিকারক কোম্পানিগুলিকে প্রদান করে রাশিয়ার অর্থ মন্ত্রণালয়।

রাশিয়ান দূতাবাস আরও জানায়, ‘এই লেনদেনগুলি আন্তর্জাতিক চুক্তিতে বিশেষজ্ঞ অনুমোদিত এজেন্ট কর্তৃক পূর্বে অনুমোদিত নথিপত্রের ভিত্তিতে রাশিয়ার অর্থ মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়ার পর সম্পন্ন হয়। রাষ্ট্রীয় রপ্তানি ঋণের ব্যবহৃত অর্থ রাশিয়ান ফেডারেশনের কাছে বিদেশি ঋণগ্রহীতা রাষ্ট্রের ঋণ হিসেবে বিবেচিত হয়।’