হরতালে কুকুরটি জামা ধরে টানছে কেন?

আজ ২৮ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার ছিল গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে সিপিবি-বাসদসহ বাম দলগুলোর আধাবেলা হরতাল। হরতালের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। ছবিতে দেখা যায়, হরতাল সমর্থক এবং পুলিশের ধ্বস্তাধ্বস্তির মধ্যে একটি কুকুর জামা টেনে ধরে রেখেছে ওই সমর্থকের।

হরতাল সমর্থক এবং পুলিশের ধ্বস্তাধ্বস্তির মধ্যে এক হরতাল সমর্থকের জামা ধরে টানছে কুকুর। আলোকচিত্রী: রেহমান আসাদ

হরতালের সমর্থনে মঙ্গলবার সকালের দিকে রাজধানীর শাহবাগসহ প্রেসক্লাবের সামনে পিকেটিং করে হরতাল সমর্থকরা। এসময় পুলিশ হরতাল সমর্থকদের বাঁধা দেয়। পরে এক হরতাল সমর্থককে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যেতে চায়। ওই সময় একটি কুকুর সেই হরতাল সমর্থক কর্মীর জামা ধরে টানতে থাকে। ছবিটি দেখে মনে হচ্ছে, পুলিশের কবল থেকে ওই হরতাল সমর্থককে যেন টেনে রক্ষা করতে চাইছে কুকুরটি।

জানা গেছে, রেহমান আসাদ নামের এক আলোকচিত্রী রাজধানীর শাহবাগ থেকে ছবিটি তুলেছেন। ছবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শেয়ার করে সাংবাদিক রফিকুল রঞ্জু লিখেছেন, 'এই প্রাণীটি আমাদের আজ কী লজ্জায়ই না ফেলল! ১০ টাকায় চাল খাওয়ানোর অঙ্গীকার, খাচ্ছি ৪০ থেকে ৫২ টাকায়! গ্যাসের দাম ৪০০ থেকে উঠলে ৯০০-তে, ২০ কোটির কাজ ২০০ কোটিতেও করা যাচ্ছে না, প্রতিবেশী চাইলেই সব পাচ্ছে, সভা-সমাবেশ করতে চাইলেই পিটুনি, ন্যায় চাইলে অমুক বন্ধ, তমুক বন্ধ, নিদেনপক্ষে চোখ রাঙানী- দেই সব বন্ধ করে দেই?

তিনি আরো লিখেন, 'পরীক্ষার মানে হয়ে উঠেছে প্রশ্নফাঁস, পাঠক্রম নিয়ে হাসফাস, সুচিকিৎসার নাম বিদেশ, নির্বাচন মানে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতা, নিয়োগ নিয়ে নয়ছয়...। ফর্দ আরো লম্বা, শুধু আমাদের হুশটাই বড্ড সংক্ষিপ্ত! যাক, এই প্রাণীটার জন্য ভালবাসা।'

পরিচালক ও সুন্দরবন রক্ষায় রামপালবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম কর্মী আব্দুল্লাহ মাহফুজ অভি লিখেছেন, 'এই সময়ে এর চেয়ে আর অসাধারণ দৃশ্য কী হতে পারে? ...রাস্ট্রের নির্যাতনের বিরুদ্ধে দাড়িয়ে গেছে কুকুরও। গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে হরতালে শাহবাগে পুলিশ টেনে-হিচরে নিয়ে যেতে চাইলে একজন হরতাল সমর্থককে। সেই কর্মীকে পুলিশের হাত থেকে ছাড়িয়ে নিতে চাইছে একটি কুকুর...!'

তিনি আরো লিখেন, 'আমরা দেখেছি যেকোন দুর্যোগেই পশু-প্রাণী আর মানুষ এক সঙ্গে দাঁড়িয়ে যায় সংকটে। আজ এই দৃশ্যই বলে দেয়- এখন চলছে রাজনৈতিক দূর্যোগ! এই কুকুরটি শিখিয়ে গেলো কিভাবে প্রতিরোধ গড়তে হবে। কীভাবে দাঁড়িয়ে যেতে হবে নির্যাতিত মানুষের পাশে।'