রংপুর বিভাগ থেকে উপদেষ্টা নিয়োগের দাবিতে বিক্ষোভ, মহাসড়ক অবরোধ

অন্তর্বর্তী সরকারে রংপুর বিভাগ থেকে একজন উপদেষ্টা নিয়োগের দাবিতে আজ সোমবার (১৩ নভেম্বর) রংপুর-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে একদল শিক্ষার্থী। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রংপুরের লালবাগ এলাকা থেকে মিছিলটি বের হয়ে মডার্ন মোড় হয়ে মহাসড়কে পৌঁছায়। প্রায় এক ঘণ্টা পর তারা কর্মসূচি শেষ করে।

ছবি - সংগৃহীত

‘বৈষম্যের অবসান চাই’, ‘আখতার হোসেনকে উপদেষ্টা হিসেবে দেখতে চাই’ – এমন স্লোগানে মুখরিত ছিল পুরো এলাকা।

বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুরের বেশ কয়েকজন সমন্বয়কারী উপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যে ইমরান আহমেদ, আশফাক আহমেদ, নাহিদ হাসান খন্দকার, ইমতিয়াজ আহমেদ, ইয়াসির আরাফাত, সাইফুল ইসলাম, শরিফুল ইসলাম প্রমুখ উল্লেখযোগ্য।

বক্তারা উত্তরাঞ্চল থেকে যোগ্য ব্যক্তিদের সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান। তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)'র সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক ও জাতীয় নাগরিক কমিটির বর্তমান সদস্য সচিব আখতার হোসেনকে উপদেষ্টা হিসেবে দেখতে চান।

গত ১১ নভেম্বর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রংপুর বিভাগ থেকে উপদেষ্টা নিয়োগের দাবি পূরণ না হলে ‘উত্তরবঙ্গ অবরোধ’ কর্মসূচি দেওয়ার হুমকি দিয়েছিল।

ছাত্র আন্দোলনের একজন গুরুত্বপূর্ণ সমন্বয়কারী সরজিস আলম এবং আখতার হোসেন প্রধান উপদেষ্টার কাছে উত্তরবঙ্গ থেকে সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে নিয়োগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন।

আজকের কর্মসূচিতে বক্তারা অন্তর্বর্তী সরকারকে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণের জন্য অভিযুক্ত করেছেন। তারা বলেন, ১৩ জন উপদেষ্টা চট্টগ্রাম বিভাগ থেকে হওয়ায় আঞ্চলিক বৈষম্য আরও তীব্র হবে।

‘উত্তরবঙ্গ অবরোধ’ কর্মসূচির হুমকি অব্যাহত

বিক্ষোভকারীরা বৃহত্তর অবরোধের মাধ্যমে রংপুর বিভাগকে অচল করে দেওয়ার কর্মসূচি ঘোষণার হুমকি দিয়েছেন। আঞ্চলিক বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে উত্তরবঙ্গের ছাত্রগোষ্ঠীর পক্ষ থেকে তারা বেশ কিছু দাবি তুলে ধরেছেন।

দাবিগুলো হলো – উত্তরবঙ্গের প্রতিটি বিভাগ থেকে কমপক্ষে দুই থেকে চারজন উপদেষ্টা নিয়োগ করতে হবে; সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আমলা ও কর্মকর্তা নিয়োগে কোনো আঞ্চলিক বৈষম্য করা যাবে না; প্রতি সপ্তাহে প্রত্যেক উপদেষ্টাকে তাদের কাজের অগ্রগতি প্রকাশ্যে জানাতে হবে; বিতর্কিত বা জুলাই বিপ্লবকে আলিঙ্গন না করা কোনো উপদেষ্টা অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন না; এবং নীতিমালা প্রণয়নে উত্তরবঙ্গের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে পরামর্শ করতে হবে।

এর আগে, একটি ফেসবুক পোস্টে সরজিস লিখেছিলেন, ‘শুধুমাত্র একটি বিভাগ থেকে ১৩ জন উপদেষ্টা! অথচ উত্তরবঙ্গের রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের ১৬টি জেলা থেকে একজনও উপদেষ্টা নেই! তাছাড়া, খুনি হাসিনার মিত্ররাও উপদেষ্টাদের মধ্যে রয়েছেন!’

১১ নভেম্বরের কর্মসূচিতে ছাত্ররা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে উপদেষ্টা নিয়োগের বিষয়ে ইতিবাচক বার্তা না পেলে রংপুর বিভাগের সঙ্গে দেশের বাকি অংশের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করার হুমকি দিয়েছিল।

ছাত্ররা জানায়, তারা বুধবার (১৩ নভেম্বর) বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি পাঠাবে এবং আরও কঠোর কর্মসূচি পালন করবে।