বাংলাদেশ কেনো সাবমেরিন কিনলো?

সম্প্রতি বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর বহরে যোগ হলো দুটি সাবমেরিন। এই প্রথমবার নৌ বাহিনী কেনো সাবমেরিন পেলো। কিন্তু হঠাৎ বাংলাদেশ সরকার সাবমেরিনের মতো উচ্চমূল্যের যান কেনো কিনতে গেলো? এ নিয়ে একটি বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে একটি আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম।

বাংলাদেশ সাবমেরিন দুটি এনেছে চীনের কাছ থেকে। চীনের নৌবাহিনীও এই ধরনের সাবমেরিনই ব্যবহার করে বলে জানা গেছে। অর্থাৎ সাবমেরিন জাহাজের আধুনিকতম সংস্করণই কিনেছে বাংলাদেশ সরকার।

প্রতিরক্ষা বিষয়ক একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা বলছে, দুটি সাবমেরিনের দাম হতে পারে অন্তত ২০৩ মিলিয়ন ডলার। যদিও বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে সাবমেরিন দুটি কিনতে কতো টাকা খরচ হয়েছে, সে বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।

হঠাৎ এতো বিপুল টাকা খরচ করে কেনো সাবমেরিন কেনা হলো, এই প্রশ্ন উঠছেই। এর একটা উত্তর অবশ্য প্রধানমন্ত্রীর কথাতেই পাওয়া যেতে পারে।

সাবমেরিন দুটি আনুষ্ঠানিকভাবে নৌ বাহিনীর কাছে হস্তান্তরের সময় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমরা কারো সঙ্গে যুদ্ধে জড়াতে চাই না। কিন্তু কেউ আক্রমণ করলে তার সমুচিত জবাব দিতে বাংলাদেশ সব সময় প্রস্তুত থাকবে। সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমরা যা করার তা করছি।’

অর্থাৎ সম্ভাব্য সামরিক প্রয়োজনের জন্য প্রস্তুতির লক্ষ্যেই বর্তমান সরকার সাবমেরিন দুটি নৌ বাহিনীতে যোগ করেছে।

এ বিষয়ে নৌবাহিনীর রিয়ার এডমিরাল এএসএমএ আউয়াল বলছেন, ‘নৌবাহিনীর আগে স্থল ও আকাশ পথের হুমকিগুলো মোকাবেলা করার সামর্থ্য আমাদের ছিলো। এখন জল পথেও আমরা যথেষ্ট সক্ষম হয়ে উঠলাম।’

তিনি আরো বলছেন যে, বাংলাদেশের বহির্বাণিজ্যের বেশির ভাগ অংশ চলে সমুদ্রপথে। এ ছাড়া তেল গ্যাস অনুসন্ধানের নানা কার্যক্রমও পরিচালিত হয় সমুদ্রে। এই সব কার্যক্রমে নিরাপত্তা দেয়াও নৌ বাহিনীর উদ্দেশ্য। সেই উদ্দেশ্য সাধণেও সাব মেরিন দুটির অন্তর্ভুক্তি তাৎপর্যপূর্ণ।

প্রতিবেদনটিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক এহসানুল হকের একটি মন্তব্যও প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে তিনি বলেছেন, ‘মায়ানমারের সঙ্গে মিমাংসার পর বিশাল সমুদ্র এলাকার নিয়ন্ত্রণ পেয়েছে বাংলাদেশ। ফলে সেই এলাকায় নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার দায়িত্বও আছে নৌ বাহিনীর উপর। তাই সক্ষমতা বাড়ানোরও প্রয়োজন ছিলো।’