তারেক রহমান: জনগণের ভোটেই ঠিক হবে কে দেশ চালাবে

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, তার দল একটি গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচনের অপেক্ষায় রয়েছে যার মাধ্যমে জনগণই ঠিক করবে আগামী পাঁচ বছর কে তাদের দেখভাল করবে।

তারেক রহমান

চারটি কর্মশালায় ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখার সময় তিনি বলেন, সঠিক নির্বাচন ব্যবস্থা এবং জনগণের প্রতি জবাবদিহিমূলক নির্বাচিত প্রতিনিধি ছাড়া দেশ ও জনগণের সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়।

বিএনপির কুষ্টিয়া, মাগুরা, চুয়াডাঙ্গা এবং মেহেরপুর জেলা শাখা পৃথকভাবে দলের ৩১ দফা রাষ্ট্র সংস্কার প্রস্তাবনা নিয়ে দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রশিক্ষণের জন্য এই কর্মসূচির আয়োজন করে।

“আমরা যদি প্রকৃত জবাবদিহিমূলক ব্যক্তিদের ক্ষমতা দিতে পারি, তাহলে জনগণের সমস্যার সমাধান করতে পারব। সঠিক নির্বাচন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জনগণ যাদের নির্বাচিত করবে তারাই তাদের প্রতি জবাবদিহি করবে। তাই, আমরা এমন একটি নির্বাচনের অপেক্ষায় আছি যা নির্ধারণ করবে কে জনগণের দেখাশোনা করবে,” বলেন তারেক রহমান।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচন অবশ্যই অবাধ, সুষ্ঠু এবং গ্রহণযোগ্য হতে হবে, যাতে জনগণ কোনো বাধা ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে।

বিএনপি নেতা বলেন, প্রধান উপদেষ্টা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ পর্যন্ত রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে আলোচনা হওয়া একটি ইতিবাচক দিক। কিন্তু শেষ পর্যন্ত, জনগণ জানতে চাইবে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, নিত্যপণ্যের দাম কমানো, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি খাতের সমস্যা সমাধানের জন্য কী করা হয়েছে। আমাদের অবশ্যই এই বিষয়গুলোর ওপর মনোনিবেশ করতে হবে।”

তিনি বলেন, তাদের নানা পরিকল্পনা ও কর্মসূচি রয়েছে এবং জনগণের প্রতি প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তারা রাষ্ট্র সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন করবেন।

একইসঙ্গে তিনি বলেন, জনগণের চাহিদা, আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ এবং তাদের সমস্যা সমাধান করতে হবে।

দীর্ঘদিন যুক্তরাজ্যে থাকার অভিজ্ঞতা উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, “নির্বাচন ব্যবস্থা গড়ে তুলে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে না পারলে আমরা জনগণ ও দেশের সমস্যার সঠিক সমাধান করতে পারব না। জাতীয় নির্বাচন হোক, স্থানীয় সরকার নির্বাচন হোক বা প্রাতিষ্ঠানিক নির্বাচন হোক, আমাদের অবশ্যই সারা দেশে সামগ্রিক নির্বাচন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।”

তিনি বলেন, যে কোনো পরিস্থিতিতে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে সব পর্যায়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। আমাদের অবশ্যই এই ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচনের সঙ্গে কোনো আপস করা যাবে না।”

তিনি বলেন, সঠিক সময়ে এবং সঠিকভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে দেশে ধীরে ধীরে জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠিত হবে।

তারেক রহমান বলেন, বিএনপির অনেক নেতা-কর্মীকে হত্যা ও গুম করা হয়েছে। প্রায় সব বিএনপি নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা করা হয়েছে। গত ১৫ বছরে আমরা প্রচণ্ড দমন-পীড়ন সহ্য করেছি, সবই জনগণের রাজনৈতিক অধিকার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার জন্য।”

বিএনপি সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণের মৌলিক সমস্যা সমাধান এবং রাষ্ট্র সংস্কারে নেতা-কর্মীদের আরও বড় ভূমিকা পালন করতে হবে।

“জনগণকে দেওয়া ৩১ দফা সংস্কার রূপরেখার মাধ্যমে প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করার শপথ নিতে হবে। ৩১ দফা প্রস্তাব বাস্তবায়ন করে জনগণের পাশে দাঁড়াতে হবে,” বলেন তিনি।

তারেক রহমান বিএনপির নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান, যারা তাদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে বা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য অন্যায় কাজে লিপ্ত হয় তাদের প্রতিরোধ করতে।

তিনি বলেন, স্বৈরাচারী শাসক শেখ হাসিনার পতনের আগেই তারা অন্যান্য গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ৩০ দফা প্রস্তাবনা প্রণয়ন করেছিলেন, কারণ তারা রাষ্ট্র সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেছিলেন।

তিনি বলেন, সরকার গঠিত বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে বিএনপির ৩১ দফা রূপরেখার অনুরূপ প্রস্তাবনা রয়েছে, কারণ তারা দেশ ও জনগণের স্বার্থকে মাথায় রেখে এই প্রস্তাবনা প্রণয়ন করেছিলেন।