মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের আওতায় আসছেন শিক্ষকরা!

ক্লাসে হাজিরা নিশ্চিত করতে সরকারি কলেজের শিক্ষকদের মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের আওতায় আনা হচ্ছে। শিক্ষার মান নিশ্চিত করতে আগামী এপ্রিল থেকে এর পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরু করবে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর (মাউশি)।

জানা যায়, সরকারিভাবে প্রত্যেক শিক্ষককে মোবাইল সিম দেয়া হবে। এই সিমের মাধ্যমেই জেনারেল প্যাকেট রেডিও সার্ভিস জিপিআরএস পদ্ধতিতে শিক্ষকদের অবস্থান নিশ্চিত করবে মাউশি।

এবিষয়ে মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. এস এম ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, ‘সরকারি কলেজে শিক্ষকদের ঠিকমতো উপস্থিত না থাকার প্রচুর অভিযোগ রয়েছে। অনেক শিক্ষকই রয়েছেন যারা সপ্তাহে দু-তিনদিনের বেশি কর্মস্থলে যান না। এসব কারণে সরকারি কলেজে শিক্ষার গুণগতমান নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না।’

অধ্যাপক ড. এসএম ওয়াহিদুজ্জামান আরো বলেন, 'সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রতিবছরই পাবলিক পরীক্ষায় তুলনামূলক খারাপ রেজাল্ট করছে। তাই শিক্ষকদের হাজিরা নিশ্চিত করতে ডিজিটাল মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।'

তিনি আরও বলেন, 'এই বিষয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান টেলিটক ও বেসরকারি মোবাইল ফোন অপারেটর বাংলালিংকের সঙ্গে ইতোমধ্যেই আলোচনা হয়েছে। জিপিআরএস পদ্ধতিতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরে বসেই শিক্ষকদের অবস্থান নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।'

প্রশাসনিক কাজে সরকারি কলেজের অধ্যক্ষরা অধিকাংশ সময় কলেজে অনুপস্থিত থাকার সুযোগে শিক্ষকদের ঘন ঘন ক্লাস ফাঁকি দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। কিছু শিক্ষক বসতবাড়ি থেকে কর্মস্থল দূরে হওয়ায় সপ্তাহে দু-তিনদিনের বেশি কলেজে যান না। এছাড়া অনেক সরকারি কলেজের শিক্ষকই পাঠদানের পরিবর্তে পছন্দের কলেজে বদলি, শিক্ষাবোর্ডসহ বিভিন্ন শিক্ষা মস্ত্রণালয়ের বিভিন্ন প্রকল্পে পদায়নের জন্য তদবিরেই ব্যস্ত থাকেন।

মন্ত্রণালয় থেকে জানা যায়, এধরণের তদবিরের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে শিক্ষকরা ভিড় করায় শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ চরম ক্ষুব্ধ। কয়েক দফা নির্দেশনা জারি করেও শিক্ষকদের তদবির ঠেকাতে পারেননি তিনি।

জানা যায়, জানুয়ারি থেকে মাউশির আঞ্চলিক কার্যালয়ের মাধ্যমে দেশের ৩২৯টি কলেজের প্রায় ১৫ হাজার শিক্ষকের যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। একই সঙ্গে অধিদফতরের মহাপরিচালক ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, ময়মনসিংহ, রাজশাহী, সিলেট, খুলনা, বরিশাল ও রংপুর অঞ্চলের পরিচালক এবং অধ্যক্ষদের সঙ্গে পৃথক মতবিনিময় করেছেন।