কুর্দি কর্মীদের বেতন ইস্যুতে টানাপোড়েন: ইরাকের প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর মামলা

ইরাকের স্বায়ত্তশাসিত কুর্দিস্তান অঞ্চলের সরকারি কর্মীদের বকেয়া বেতন পরিশোধ না করার অভিযোগে প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শিয়া আল-সুদানির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আবদুল লতিফ রশিদ। এতে দেশটির নেতৃত্বের অভ্যন্তরীণ বিরোধ আরও প্রকট হয়ে উঠেছে।

ইরাকের প্রধানমন্ত্রী ও প্রেসিডেন্ট

ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি'র বরাত দিয়ে জানা যায়, কুর্দি সম্প্রদায়ভুক্ত প্রেসিডেন্ট রশিদ গত মাসে প্রধানমন্ত্রী সুদানি ও অর্থমন্ত্রী তাইফ সামির বিরুদ্ধে ইরাকের শীর্ষ আদালতে এই মামলা দায়ের করেন। তবে প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা হাওরি তৌফিক রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিষয়টি প্রকাশ্যে আনেন।

মামলায় কুর্দিস্তানের কর্মচারীদের নিরবচ্ছিন্নভাবে বেতন পরিশোধ নিশ্চিত করার আদেশ চাওয়া হয়েছে। বাগদাদ ও কুর্দিস্তানের আঞ্চলিক রাজধানী আর্বিলের মধ্যে দীর্ঘদিনের আর্থিক বিরোধের জের ধরে এই সংকট তৈরি হয়েছে। ইরাকের সরকারি খাত দীর্ঘদিন ধরে অদক্ষতা ও দুর্নীতির শিকার। সরকারি কর্মীরা জানুয়ারির বেতন পেলেও এখনো ডিসেম্বরের বেতন পাননি, বিশেষ করে সুলাইমানিয়াহ শহরে।

উপদেষ্টা তৌফিক জানান, বকেয়া বেতন পরিশোধ না হওয়ায় সুলাইমানিয়াহতে ব্যাপক অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ায় মামলার বিষয়টি এখন প্রকাশ্যে আনা হয়েছে। কুর্দিস্তানের আঞ্চলিক প্রেসিডেন্ট নেচিরভান বারজানি সম্প্রতি বেতনসহ আর্থিক বিষয়ে সহযোগিতার জন্য প্রধানমন্ত্রী সুদানিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

গত বছর ইরাকের সর্বোচ্চ আদালত এক আদেশে কুর্দিস্তানের সরকারি কর্মীদের বেতন আঞ্চলিক প্রশাসনের মাধ্যমে না দিয়ে সরাসরি পরিশোধের নির্দেশ দেয়। সুলাইমানিয়ার কর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে এই দাবি জানিয়ে আসছিলেন। তবে কর্মকর্তারা প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে বেতন পরিশোধ অনিয়মিত হওয়ার দাবি করছেন।

রোববার সুলাইমানিয়াহ থেকে শত শত মানুষ আর্বিল শহরে বিক্ষোভ করতে গেলে পুলিশ টিয়ার গ্যাস ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। স্থানীয় গণমাধ্যম জানায়, সুলাইমানিয়াহতে দুই সপ্তাহ ধরে কর্মীরা অবস্থান ধর্মঘট চালিয়ে যাচ্ছেন এবং ১৩ জন শিক্ষক অনশন শুরু করেছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ইহসান আল-শেমারি বলেন, এই মামলা সুদানি ও রাশিদের মধ্যে বাড়তে থাকা মতবিরোধকে স্পষ্ট করে তুলেছে। ‘আমরা কার্যত নির্বাহী কর্তৃপক্ষের একটি বড় বিভাজনের মুখোমুখি, যা এখন প্রকাশ্যে চলে এসেছে।’

গত মাসে প্রধানমন্ত্রী সুদানি প্রেসিডেন্ট রশিদের ছেলের মালিকানাধীন কোম্পানি আইকিউ ইন্টারনেট সার্ভিসেসের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন।