দেশর ৮৬% জনগণ নির্দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন চান

দেশের ৮৬ শতাংশ মানই মনে করেন যে সংসদীয় নির্বাচন একটি নির্দলীয় সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত। সংবিধান সংস্কার কমিশনের পক্ষে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) কর্তৃক পরিচালিত ‘জাতীয় জনমত জরিপ - ২০২৪’ শীর্ষক জরিপে এই তথ্য উঠে এসেছে।

ছবি - সংগৃহীত

জরিপের ফলাফল কমিশনের প্রতিবেদনের সঙ্গে প্রকাশিত হয়েছে। ২০২৪ সালের ৫ থেকে ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে দেশের ৬৪টি জেলার ১৮ থেকে ৭৫ বছর বয়সী ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে এই জরিপ পরিচালনা করা হয়েছে। ৪৫,৯২৫টি পরিবার থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে এবং কিশ গ্রিড পদ্ধতি ব্যবহার করে পরিবারের ১৮ থেকে ৭৫ বছর বয়সী একজন সদস্যকে জরিপের জন্য নির্বাচন করা হয়েছে। নির্বাচিত ব্যক্তিদের কাছ থেকে প্রশ্নপত্রের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।

নির্বাচনকালীন সরকার সম্পর্কে ৮৬ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন, নির্বাচন নির্দলীয় সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত। ৬ শতাংশ রাজনৈতিক সরকারের পক্ষে মত দিয়েছেন, ৬ শতাংশের কিছু বেশি বলেছেন তারা এ বিষয়ে অবগত নন এবং ২ শতাংশ উত্তর দিতে অস্বীকার করেছেন।

১৯৯১ সালে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের পর থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত সমস্ত নির্বাচনই বিশ্বাসযোগ্য ছিল। তবে ২০১১ সালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার ওপর সংবিধানের ১৩তম সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে। এরপর আওয়ামী লীগ সরকার সংবিধান সংশোধন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে।

আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালে তিনটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, যা বিতর্কিত ছিল। জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের পর ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে এবং ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। ১৮ ডিসেম্বর হাইকোর্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্তির বিষয়ে সংবিধানের ১৫তম সংশোধনীর দুটি অনুচ্ছেদ বাতিল করে দেয়, বলে যে এই অনুচ্ছেদগুলি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

ভবিষ্যতে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের বিষয়ে সংবিধানে অনুচ্ছেদ অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা চলছে। সংবিধান সংস্কার কমিশনও সংবিধানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করেছে।

প্রধানমন্ত্রীর দুই মেয়াদ

রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষার বিষয়ে ৩৭ শতাংশ উত্তরদাতা রাষ্ট্রপতিকে ক্ষমতা প্রদানের পক্ষে মত দিয়েছেন, ৪৫ শতাংশ বলেছেন প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা থাকা উচিত। ৬৪ শতাংশ উত্তরদাতা প্রধানমন্ত্রীর সর্বোচ্চ দুই মেয়াদের পক্ষে মত দিয়েছেন, ১০ শতাংশ এর বিরোধিতা করেছেন এবং ১৫ শতাংশ মনে করেন প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ নির্ধারণের প্রয়োজন নেই। ৪৯ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করেন একজন ব্যক্তি একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী এবং ক্ষমতাসীন দলের প্রধানের পদে থাকা উচিত নয়, ৩৭ শতাংশ মনে করেন একজন ব্যক্তি উভয় পদে থাকতে পারেন।

প্রথম আলো অবলম্বনে