ড. ইউনূস: আ. লীগ সরকার ‘আইয়ামে জাহেলিয়া’ প্রতিষ্ঠা করেছিল

জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের পর ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে দেশে অমানবিক নির্যাতনের বীভৎস চিত্র উন্মোচিত হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অবস্থিত কয়েকটি গোপন বন্দিশালা পরিদর্শন শেষে গত সরকারের আমলে দেশে এক অন্ধকার যুগের সৃষ্টি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস

অধ্যাপক ইউনূস গোপন বন্দিশালাগুলোকে ‘আইয়ামে জাহেলিয়া’ বা অন্ধকার যুগের প্রতীক হিসেবে অভিহিত করেছেন। ভুক্তভোগী, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের সদস্য এবং সাংবাদিকদের নিয়ে আগারগাঁও, কচুক্ষেত ও উত্তরায় অবস্থিত এই বন্দিশালাগুলি পরিদর্শনকালে তিনি সেখানকার বীভৎস ও নৃশংসতার চিত্র প্রত্যক্ষ করেন।

বন্দিশালা পরিদর্শন শেষে অধ্যাপক ইউনূস জানান, বন্দিদের ওপর চালানো নির্যাতনের বর্ণনা শুনে তিনি বিস্মিত এবং মর্মাহত। বিনা কারণে, বিনা দোষে মানুষদের সন্ত্রাসী অথবা জঙ্গি সাজিয়ে এই বন্দিশালাগুলোতে আটকে রাখা হতো। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, এ ধরনের বন্দিশালা সারাদেশে ছড়িয়ে আছে, যার সংখ্যা ৭০০ থেকে ৮০০ পর্যন্ত হতে পারে।

অধ্যাপক ইউনূস গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনকে বন্দিশালাগুলি উন্মোচন করার জন্য ধন্যবাদ জানান এবং বলেন, এগুলো স্বৈরাচারী শাসনের প্রমাণস্বরূপ। একজন বন্দি জানিয়েছেন, তাদের যে খুপড়িতে আটকে রাখা হতো, তা গ্রামের মুরগির খাঁচার চেয়েও ছোট। মাসের পর মাস, বছরের পর বছর মানুষকে এই অমানবিক পরিবেশে বন্দি রাখা হয়েছে।

অধ্যাপক ইউনূস মনে করেন, এই নির্যাতনকারীরাও আমাদের সমাজেরই অংশ। এই অন্ধকার অতীত থেকে সমাজকে মুক্ত না করলে নতুন সমাজ গঠন সম্ভব হবে না। তিনি গুমের শিকার ব্যক্তিদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার দিকে প্রাধান্য দেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, সরকার নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করবে এবং এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করবে।