শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ: ভারতকে স্মারক পাঠাবে ঢাকা

শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের জন্য ভারতের কাছে আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ। গত বছরের ডিসেম্বরে কূটনৈতিক চিঠির (নোট ভারবাল) মাধ্যমে প্রয়োজনীয় নথিপত্র পাঠানোর পর এবার উপযুক্ত সময়ে স্মারকলিপি পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

মোহাম্মদ রফিকুল আলম

বৃহস্পতিবার সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মদ রফিকুল আলম এ তথ্য জানান। হাসিনার প্রত্যর্পণের জন্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কিংবা অন্যান্য প্রয়োজনীয় নথিপত্র পাঠানো হয়েছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র বলেন, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে প্রাপ্ত সকল প্রয়োজনীয় নথিপত্র প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় ভারতের কাছে পাঠানো নোট ভারবালের সাথে সংযুক্ত করা হয়েছে।

ভারতকে কবে স্মারকলিপি পাঠানো হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র বলেন, এটি একটি কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রক্রিয়া। ‘নেতৃত্ব যখন উপযুক্ত সময় মনে করবেন, তখনই স্মারকলিপি পাঠানো হবে,’ তিনি যোগ করেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নোট ভারবাল পাঠানোর পরও ভারত এখনও হাসিনার প্রত্যর্পণের বিষয়ে কোনো সাড়া দেয়নি। ‘আমরা ভারতের প্রতিক্রিয়ার প্রতীক্ষায় রয়েছি,’ রফিকুল আলম বলেন।

হাসিনার প্রত্যর্পণের বিষয়ে ভারতের জবাবের জন্য দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষা করছে বাংলাদেশ। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কোনো সাড়া না পেলে স্মারকলিপি পাঠানোর কথা ছিল।

ভারতের পক্ষ থেকে জবাব পাওয়ার পর সরকার পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে বলেও জানান তিনি।

ভারতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল নিশ্চিত করেছেন যে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের কাছ থেকে হাসিনার প্রত্যর্পণের আবেদন তারা পেয়েছেন।

জুলাইয়ের ঘটনার পর হত্যা, গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধসহ ১০০টিরও বেশি মামলার মুখোমুখি হয়ে ৫ আগস্ট ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশ ও ভারত ২০১৩ সালে একটি প্রত্যর্পণ চুক্তি স্বাক্ষর করে, যা পরবর্তীতে ২০১৬ সালে সংশোধন করা হয়। এ চুক্তি এ ধরনের অনুরোধের জন্য একটি আইনি কাঠামো প্রদান করে।

২০১৬ সালের জুলাই মাসে দুই দেশের মধ্যে পলাতক অপরাধীদের দ্রুত প্রত্যর্পণের সুবিধার্থে দ্বিপাক্ষিক প্রত্যর্পণ চুক্তির ১০ (৩) ধারা সংশোধন করা হয়।

অন্তর্বর্তী সরকার দাবি করে, জুলাই-আগস্ট পরিস্থিতিতে হত্যাকাণ্ডের আদেশদাতা ছিলেন শেখ হাসিনা।

সেপ্টেম্বরে, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, যদি হাসিনা অপরাধ করে থাকেন, তাহলে তাকে প্রত্যর্পণ করে বিচারের মুখোমুখি করা উচিত। ‘দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস ক্লাইমেট ফরোয়ার্ড ইভেন্ট’-এ একটি প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কেন তাকে প্রত্যর্পণ করা হবে না? যদি তিনি অপরাধ করে থাকেন, তাহলে তাকে প্রত্যর্পণ করে বিচারের মুখোমুখি করা উচিত।’

সূত্র: ইউএনবি