ড. ইউনূস: শেখ হাসিনার বিচার হবেই, নাহলে জনগণ ক্ষমা করবে না

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জোর দিয়ে বলেছেন, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীদের বিচারের আওতায় আনা হবে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রীয় ইংরেজি দৈনিক 'দ্য ন্যাশনাল'-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই প্রতিশ্রুতি দেন। দুবাইয়ে ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্টস সামিটের (ডব্লিউজিএস) ফাঁকে এই সাক্ষাৎকারটি দেন তিনি।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আমরা তাকে (হাসিনা) বিচারের আওতায় আনবো। এটি অবশ্যই করা হবে, অন্যথায় জনগণ আমাদের ক্ষমা করবে না।’ তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, শেখ হাসিনা ও তার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের খুঁজে বের করে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে এবং আইনের আওতায় আনা হবে।

গত ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত ও দেশত্যাগ করেন। এর মাধ্যমে তার ১৫ বছরের একদলীয় শাসনের অবসান ঘটে। পরবর্তীতে ৮ আগস্ট অধ্যাপক ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের ছাত্র আন্দোলনে পুলিশ ও শেখ হাসিনার দলের লোকজন প্রায় ১,৪০০ জনকে হত্যা করে এবং ১১ হাজারেরও বেশি আহত হয়। নিহতদের মধ্যে ১৩ শতাংশই ছিল শিশু। পুলিশের দাবি, এই সহিংসতায় ৪৪ জন পুলিশ সদস্যও নিহত হন।

বর্তমানে ভারতে অবস্থানকারী হাসিনার প্রত্যর্পণের জন্য ভারতকে ইতিমধ্যেই নোটিশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান অধ্যাপক ইউনূস। তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে অপরাধের বিপুল পরিমাণ প্রমাণ আছে, যার মধ্যে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের প্রতিবেদনও রয়েছে।’

অধ্যাপক ইউনূস জানান, বিচার ব্যবস্থা, নির্বাচন ব্যবস্থা, পুলিশ ও প্রশাসনে সংস্কারের জন্য ছয়টি কমিশন গঠন করা হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন সরকারি তহবিল পুনরুদ্ধারের কাজ শুরু করবে।

তিনি আরও জানান, আগামী ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। নির্বাচনের পর নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে।

জুলাই আন্দোলনের সময় সংযুক্ত আরব আমিরাতে ৫৩ জন বাংলাদেশি বিক্ষোভকারীকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। অধ্যাপক ইউনূসের ব্যক্তিগত অনুরোধে আমিরাতের প্রেসিডেন্ট তাদের মুক্তি দেন। অধ্যাপক ইউনূস আমিরাতের সাথে দৃঢ় সম্পর্ক বজায় রাখার আশা প্রকাশ করেন।