নিউইয়র্ক টাইমস: ইরানে ইসরায়েলি হামলার পরিকল্পনা নাকচ করে দিয়েছেন ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েলের একটি প্রস্তাবিত হামলার পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি এর পরিবর্তে তেহরানের সঙ্গে নতুন চুক্তির পথে হাঁটতে আগ্রহী। বুধবার (১৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও ডোনাল্ড ট্রাম্প

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েল চলতি বছরের মে মাসের শুরুতে এই হামলার পরিকল্পনা করেছিল। এর মূল লক্ষ্য ছিল ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সক্ষমতাকে অন্তত এক বছর পিছিয়ে দেওয়া। এই পরিকল্পনায় এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে বিস্তৃত বোমাবর্ষণ, বিমান হামলা এবং কমান্ডো অভিযানের প্রস্তাব রাখা হয়েছিল।

ইসরায়েলি কর্মকর্তারা আশা করেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র শুধু এই পরিকল্পনার অনুমোদনই দেবে না, বরং অভিযানে সক্রিয় সমর্থনও জোগাবে। কিন্তু গত সপ্তাহে হোয়াইট হাউসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে ট্রাম্প এই পরিকল্পনা নাকচ করে দেন। বৈঠকে উপস্থিত ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স, যুদ্ধবিষয়ক সচিব পিট হেগসেথ এবং জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসি গ্যাবার্ডসহ বেশ কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তা এই হামলাকে কেন্দ্র করে ইরানের সঙ্গে ব্যাপক সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, গত বছর এপ্রিল ও অক্টোবরে ইরান এবং ইসরায়েলের মধ্যেকার পাল্টাপাল্টি হামলা দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশের মধ্যে উত্তেজনাকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিল।

প্রসঙ্গত, ডোনাল্ড ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে ক্ষমতায় থাকাকালে ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত ইরান পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেন এবং তেহরানের ওপর নতুন করে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। এর জবাবে ইরানও ধীরে ধীরে চুক্তির শর্তগুলো লঙ্ঘন করতে শুরু করে এবং ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের গতি বাড়িয়ে দেয়।

এমনকি গত মাসেই ট্রাম্প হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছিলেন, ‘চুক্তি না হলে ইরানে বোমা ফেলা হবে।’ এর প্রতিক্রিয়ায় ইরান পাল্টা জানিয়েছিল যে, তারা কোনো ধরনের চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না এবং যেকোনো আগ্রাসনের দাঁতভাঙা জবাব দেবে। ট্রাম্পের সাম্প্রতিক এই সিদ্ধান্ত সেই উত্তেজনার মধ্যেই নতুন মোড় নিলো বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।