দামেস্কের কাছে ইসরায়েলি বিমান হামলা, উত্তেজনা বৃদ্ধি

বুধবার ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের উপকণ্ঠে আশরাফিয়াহ সাহনায়া শহরে বেশ কয়েকটি বিমান হামলা চালিয়েছে। সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সানা জানিয়েছে, এই হামলায় আশপাশের কয়েকটি এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

দামেস্ক, সিরিয়া - ছবি - সংগৃহীত

ইসরায়েল এই হামলাকে একটি ‘সতর্কতামূলক অভিযান’ হিসেবে অভিহিত করেছে। তাদের দাবি, আশরাফিয়াহ সাহনায়ায় দ্রুজ সম্প্রদায়ের ওপর হামলার প্রস্তুতি নেওয়া একটি সশস্ত্র গোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন, এই হামলার লক্ষ্য ছিল ‘দ্রুজদের ক্ষতি প্রতিরোধ করা।’

ইসরায়েলে বসবাসকারী প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার দ্রুজ জনসংখ্যার বেশিরভাগই ইসরায়েলি নাগরিক এবং সামরিক বাহিনীতে কর্মরত। তবে সিরিয়ার গোলান মালভূমিতে বসবাসকারী প্রায় ২৩,০০০ দ্রুজ ইসরায়েলি নাগরিকত্ব প্রত্যাখ্যান করে নিজেদের সিরিয়ার নাগরিক হিসেবেই পরিচয় দেন।

অন্যদিকে, সিরিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শহরে ‘আইন বহির্ভূত গোষ্ঠীগুলোর’ হামলায় ১৬ জন বেসামরিক নাগরিক ও নিরাপত্তা কর্মী নিহত হয়েছেন। এই সহিংসতার সূত্রপাত হয় নবী মুহাম্মদ (স.)-কে অবমাননাকর একটি ভয়েস রেকর্ডিং ছড়িয়ে পড়ার পর, যা সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টি করে এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিশোধের ডাক দেওয়া হয়। বুধবার সন্ধ্যার মধ্যে দামেস্ক গ্রামাঞ্চল নিরাপত্তা অধিদপ্তর আশরাফিয়াহ সাহনায়ায় তাদের অভিযান সমাপ্ত করার কথা ঘোষণা করে।

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে বাশার আল-আসাদ সরকারের পতনের পর থেকে ইসরায়েল সিরিয়ার অসামরিক বাফার জোন দখল করে রেখেছে, যা ১৯৭৪ সালের সৈন্য প্রত্যাহার চুক্তির লঙ্ঘন। ইসরায়েল এই দখলের কোনো সময়সীমাও নির্ধারণ করেনি।

রাষ্ট্রপতি আহমেদ আল-শারার নেতৃত্বে সিরিয়ার নতুন প্রশাসন ইসরায়েলের এই কর্মকাণ্ডকে দেশের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন বলে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং অবিলম্বে ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহারের দাবি করেছে। সিরিয়া সরকার দেশে বসবাসকারী দ্রুজসহ (যারা জনসংখ্যার প্রায় ৩% এবং মূলত সুওয়াইদাতে কেন্দ্রীভূত) সকল সম্প্রদায়ের সমান সুরক্ষার ওপর জোর দিয়েছে। তবে ইসরায়েল দাবি করছে, সিরিয়ার দ্রুজরা আক্রমণের ঝুঁকিতে রয়েছে। দামেস্ক এই দাবিকে ইসরায়েলের ভূখণ্ড দখলের অজুহাত হিসেবে দেখছে।