তীব্র খাদ্য সংকট: দুই-তিন দিনে একবেলা খাবার জুটছে লাখো ফিলিস্তিনির

মঙ্গলবার ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) জানিয়েছে, ইসরায়েলের ভয়াবহ অবরোধের মুখে গাজা উপত্যকায় লাখো ফিলিস্তিনি প্রতি দুই বা তিন দিনে মাত্র একবেলা খাবার পাচ্ছেন।

ছবি - সংগৃহীত

ইউএনআরডব্লিউএ’র মুখপাত্র আদনান আবু হাসনা আল-গাদ টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘গাজায় ৬৬,০০০-এরও বেশি শিশু চরম অপুষ্টিতে ভুগছে।’

সরকারি, মানবাধিকার সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক প্রতিবেদন অনুসারে, গত ২ মার্চ থেকে ইসরায়েল গাজার ক্রসিংগুলো খাদ্য, চিকিৎসা ও মানবিক সহায়তার জন্য বন্ধ রেখেছে, যা উপত্যকায় বিদ্যমান মানবিক সংকটকে আরও ঘনীভূত করেছে।

গাজার সরকারি গণমাধ্যম অফিসের প্রকাশিত পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত অক্টোবর ২০২৩ থেকে কমপক্ষে ৫৭ জন ফিলিস্তিনি অনাহারে মারা গেছেন।

বিশ্বব্যাংকের তথ্যমতে, গাজার প্রায় ২৪ লক্ষ মানুষ সম্পূর্ণরূপে মানবিক সাহায্যের ওপর নির্ভরশীল।

আবু হাসনা বলেন, ‘ইউএনআরডব্লিউএ গাজায় ত্রাণ বিতরণের নতুন ইসরায়েলি পরিকল্পনার অংশ হবে না, কারণ এই পরিকল্পনা জাতিসংঘের মানদণ্ড মোটেও মেনে চলে না।’

রবিবার রাতে, ইসরায়েলি নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা বেসরকারি নিরাপত্তা ঠিকাদারদের মাধ্যমে অবরুদ্ধ ছিটমহলে ত্রাণ বিতরণের একটি পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে।

তবে, জাতিসংঘ এবং কয়েক ডজন আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা এই পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা বলেছে, এটি মানবিক নীতির পরিপন্থী, বাস্তবায়নের দিক থেকে অকার্যকর এবং ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিক ও কর্মীদের বিপদের মুখে ফেলতে পারে।

গাজায় জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সমন্বয়কারী দল রবিবার রাতে বলেছে যে তারা ‘কেবল সেইসব পরিকল্পনাকেই সমর্থন করতে পারে যা মানবতা, নিরপেক্ষতা, স্বাধীনতা এবং অপক্ষপাতিত্বের মানবিক নীতিগুলোকে সম্মান করে।’

গত অক্টোবর ২০২৩ থেকে গাজায় ইসরায়েলের নৃশংস হামলায় ৫২,৫০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) নভেম্বরে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।

এছাড়াও, এই উপত্যকায় যুদ্ধের জন্য ইসরায়েল আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) একটি গণহত্যা মামলারও মুখোমুখি।