অন্তর্বর্তী সরকারের পদক্ষেপে বিএনপির পূর্ণ সমর্থন

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ‘ফ্যাসিবাদী’ আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের নেওয়া সিদ্ধান্তকে ‘সঠিক’ বলে অভিহিত করেছে। দলটি মনে করে, প্রাসঙ্গিক আইন সংশোধন করে এই বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা উচিত।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

রোববার বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এই অবস্থান ব্যক্ত করা হয়। বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘আমরা আনন্দিত যে, বিলম্বে হলেও অন্তর্বর্তী সরকার ফ্যাসিবাদী সরকারের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার দ্রুত করার এবং বিচারকার্য নির্বিঘ্ন করার স্বার্থে ফ্যাসিবাদী দল আওয়ামী লীগ ও তার সঙ্গে যুক্ত সকল সংগঠনের কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।"

বিএনপি মহাসচিব আরও উল্লেখ করেন, ‘প্রাসঙ্গিক আইন সংশোধন করে বিচারিক প্রক্রিয়ায় গুম, খুন, নিপীড়ন ও জনগণের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন অপশাসন চালনাকারী, ফ্যাসিবাদী দলের বিচার করার সিদ্ধান্তকে আমরা সঠিক বলে মনে করি।’ তবে, তিনি যোগ করেন যে, বিএনপির দাবি অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত আরও আগে নেওয়া হলে সরকারকে ‘চাপের মুখে ব্যবস্থা নেওয়ার মতো বিব্রতকর ও অনভিপ্রেত অবস্থায়’ পড়তে হতো না এবং ভবিষ্যৎ কার্যক্রম পরিচালনায় অন্তর্বর্তী সরকার বিষয়টি সতর্কতার সঙ্গে বিবেচনা করবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।

বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিগত সাক্ষাতের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, গত ১০ ফেব্রুয়ারি এবং ১৬ এপ্রিল প্রধান উপদেষ্টার হাতে দেওয়া পত্রে বিএনপি ‘গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক দল হিসাবে বিচারিক প্রক্রিয়ায় নিয়ে আসার’ এবং ‘পতিত ফ্যাসিবাদী দল ও সেই দলীয় সরকারের সঙ্গে যারাই যুক্ত ছিল তাদের বিচার দ্রুত করে দেশের রাজনীতির ময়দানকে জঞ্জালমুক্ত করার’ দাবি জানিয়েছিল। ফখরুল জোর দিয়ে বলেন, আইনি প্রক্রিয়াতেই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা সম্ভব ও উচিত বলে বিএনপি মনে করে এবং বিভিন্ন সভা-সমাবেশে তারা এই দাবি উত্থাপন করে এসেছেন।

দলটি আরও স্পষ্ট করে যে, তারা প্রশাসনিক আদেশে কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার বিরুদ্ধে। এই প্রসঙ্গে বিএনপি পূর্ববর্তী সরকার কর্তৃক জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ ঘোষণার সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছিল বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

সবশেষে, বিএনপি মহাসচিব দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে ভোটাধিকার বঞ্চিত জনগণের গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে অবিলম্বে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিও ক্রমাগত উপেক্ষিত হওয়ায় জনমনে যে ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে সে ব্যাপারে সচেতন হওয়ার জন্য আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’