আপনি পড়ছেন

বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বড় জাতীয় ঋণগ্রস্ত দেশ যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির ঋণের পরিমাণ এখন ৩৬ ট্রিলিয়ন (লাখ কোটি) ডলার। এই বিশাল ঋণের এক-চতুর্থাংশ আবার চীন-জাপানসহ অন্যান্য দেশের। ভয়াবহ এই ঋণের বোঝায় দীর্ঘমেয়াদী আর্থিক স্থিতিশীলতা নিয়ে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের মুখে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। খবর আল জাজিরার।

us debtবিশ্বের সবচেয়ে বড় জাতীয় ঋণগ্রস্ত দেশ যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ঋণ মানে হচ্ছে, ঋণদাতাদের কাছে দেশটির সরকারের মোট ঋণের পরিমাণ, যা বর্তমানে ৩৬.২ ট্রিলিয়ন ডলার। এটি দেশটির বার্ষিক অর্থনৈতিক উৎপাদন বা মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ১২২ শতাংশ। ২০২০ সালে করোনা মহামারীর সময় যুক্তরাষ্ট্রের ঋণ ও জিডিপি অনুপাত সর্বোচ্চ ছিল, যা পৌঁছেছিল ১৩৩ শতাংশে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রতি তিন মাসে প্রায় ১ ট্রিলিয়ন ডলার করে বাড়ছে যুক্তরাষ্ট্রের ঋণ। কেন এটি ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে?

এর জবাব হচ্ছে, দেশটির সরকার ট্যাক্সসহ অন্যান্য খাত থেকে যা রাজস্ব সংগ্রহ করে, তার চেয়ে যখন বেশি অর্থ ব্যয় করে, তখন ঘাটতি তৈরি হয়। এই ঘাটতি পূরণ করার জন্য সরকার আরও অর্থ ঋণ করে।

মার্কিন সরকার অর্থ ধার করতে চাইলে ট্রেজারি বিভাগ বা ফেডারেল সরকারের অর্থ বিভাগের দ্বারস্থ হয়। ট্রেজারি অর্থ ধার করার জন্য বিনিয়োগকারীদের কাছে বিভিন্ন ধরণের ঋণ সিকিউরিটিজ, যেমন ট্রেজারি বিল, ট্রেজারি নোট এবং ট্রেজারি বন্ড বিক্রি করে।

মার্কিন সরকারকে ঋণ নিতে হলে অবশ্য পার্লামেন্টের অনুমোদন নিতে হয়। যদিও সরকার কতটা ঋণ গ্রহণ করতে পারবে, তার একটি সীমাও নির্ধারিত রয়েছে। তা সত্ত্বেও সরকারকে আরও বেশি অর্থ ধারের সুযোগ দিতে মার্কিন কংগ্রেসকে ১৯৬০ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৭৮ বার ঋণের সীমার শর্তাবলী বৃদ্ধি, স্থগিত বা পরিবর্তন করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ৩৬.২ ট্রিলিয়ন ঋণের তিন-চতুর্থাংশ, প্রায় ২৭.২ ট্রিলিয়ন ডলার অভ্যন্তরীণভাবে নেওয়া। এরমধ্যে ১৫.১৬ ট্রিলিয়ন ডলার (৪২ শতাংশ) এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারিখাতের বিনিয়োগকারী সংস্থার কাছ থাকে, যার বেশিরভাগই সঞ্চয় বন্ড, মিউচুয়াল ফান্ড এবং পেনশন তহবিলের আকারে নেওয়া।

এছাড়া ৭.৩৬ ট্রিলিয়ন ডলার (২০ শতাংশ) মার্কিন সরকারের আন্তঃসরকারি সংস্থা এবং ট্রাস্টের কাছ থেকে ধার নেওয়া। ৪.৬৩ ট্রিলিয়ন ডলার (১৩ শতাংশ) ফেডারেল রিজার্ভের কাছ থেকে নেওয়া।

একক বৃহত্তম হিসেবে ওয়ারেন বাফেটের কোম্পানি বার্কশায়ার হ্যাথওয়ের কাছ থেকে ট্রেজারি বিলের মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে ৩১৪ বিলিয়ন ডলার।

অন্যদিকে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে চার ভাগের এক ভাগ ঋণ, যার মূল্য ৯.০৫ ট্রিলিয়ন ডলার। এরমধ্যে জাপানের কাছে ১.১৩ ট্রিলিয়ন ডলার, যুক্তরাজ্যের কাছে ৭৭৯.৩ বিলিয়ন ডলার, চীনের কাছে ৭৬৫.৪ বিলিয়ন ডলার ঋণ রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের।

এছাড়াও কর স্বর্গরাজ্য হিসেবে পরিচিত কেম্যান দ্বীপপুঞ্জের কাছে ৪৫৫.৩ বিলিয়ন ডলার, এবং কানাডার কাছে ৪২৬.২ বিলিয়ন ডলার ঋণ রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের।

গত ৫০ বছরে, বিদেশী সংস্থাগুলোর কাছ থেকে মার্কিন ঋণের পরিমাণ পাঁচগুণ বেড়েছে। ১৯৭০ সালে মোট ঋণের মাত্র ৫ শতাংশ ছিল বিদেশি ঋণ। বর্তমানে সেটি বেড়ে ২৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, মার্কিন সরকার যদি ঋণের সুদ পরিশোধে বেশি অর্থ ব্যয় করে, তবে তাতে বাজেট এবং জনসাধারণের ব্যয়কে আরও প্রভাবিত করবে। সরকার তার জাতীয় ঋণ পরিশোধের জন্য আরও রাজস্ব সংগ্রহে কর বাড়াতে পারে, যার ফলে গড় মানুষের খরচ বৃদ্ধি পেতে পারে। মানুষের বন্ধকী, গাড়ি ঋণ ও ক্রেডিট কার্ড ঋণ আরও ব্যয়বহুল হয়ে উঠতে পারে।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.