লুলা: গাজায় যা হচ্ছে তা যুদ্ধ নয়, গণহত্যা

গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় ফিলিস্তিনি ডাক্তার আলা আল-নাজ্জারের ৯ সন্তান নিহত হওয়ার ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা। তিনি এই হামলাকে ‘নির্লজ্জ ও কাপুরুষোচিত’ বলে আখ্যায়িত করে গাজায় চলমান পরিস্থিতিকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। খবর মিডলইস্ট মনিটরের।

ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা

গত শনিবার (২৪ মে) ইসরায়েলি বিমান হামলায় ফিলিস্তিনি চিকিৎসক আলা আল-নাজ্জারের ৯ সন্তান নিহত হয়। হামলায় আল-নাজ্জারের স্বামী ও একমাত্র বেঁচে যাওয়া সন্তানও গুরুতর আহত হয়েছেন, যারা বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

প্রেসিডেন্ট কার্যালয় থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে লুলা বলেন, ‘এটি আরেকটি লজ্জাজনক ও কাপুরুষোচিত কাজ। গাজায় যা ঘটছে তা আর আত্মরক্ষার বিষয় নয়, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই বা জিম্মিদের মুক্ত করার বিষয়ও নয়। এখানে যা ঘটছে তা হলো প্রতিশোধ।’

ইসরায়েলি নির্বিচার হামলাকে একটি রাষ্ট্রীয় সশস্ত্র বাহিনীর নিরস্ত্র বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে একপক্ষীয় যুদ্ধ বলে আখ্যায়িত করে লুলা আরও বলেন, ‘এই ঘটনা প্রমাণ করে যে গাজার পরিস্থিতি কতটা নিষ্ঠুর এবং অমানবিক হয়ে উঠেছে। নারী ও শিশুরাই এর প্রধান শিকার।’

লুলার এই বক্তব্য এমন সময়ে এল, যখন আন্তর্জাতিক মহলে ইসরায়েলের সামরিক অভিযান নিয়ে ক্ষোভ ও উদ্বেগ বাড়ছে। ব্রাজিলসহ বিশ্বের বহু দেশে ফিলিস্তিনের পক্ষে, গাজার পক্ষে বিক্ষোভ হচ্ছে, যেখানে মানুষ ইসরায়েলি হামলার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছে।

ব্রাজিলের জনগণের মধ্যেও ব্যাপক সহানুভূতির সাড়া দেখা যাচ্ছে ফিলিস্তিনিদের প্রতি। দেশটির বড় বড় শহরে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করছেন। লুলা তার বক্তব্যে জোর দিয়ে বলেন, ‘বিশ্ব আর নীরব থাকতে পারে না। আমাদের নিরপরাধদের, শিশুদের, ফিলিস্তিনি জনগণের পাশে দাঁড়াতে হবে যারা এখনো তাদের মাতৃভূমির জন্য লড়াই করছে।’

এর আগে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে আফ্রিকান ইউনিয়নের এক সম্মেলনে লুলা গাজায় ইসরায়েলি অভিযানকে হলোকাস্টের সঙ্গে তুলনা করেন। তার এই মন্তব্যে ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সংকট দেখা দেয়। ইসরায়েল তাকে ‘অপ্রিয় ব্যক্তি’ হিসেবে ঘোষণা করে এবং নিজেদের রাষ্ট্রদূতকে ব্রাজিল থেকে প্রত্যাহার করে নেয়। জবাবে ব্রাজিলও তেল আবিব থেকে নিজেদের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে নেয়।

ফিলিস্তিনের পক্ষে করা বিভিন্ন মন্তব্যের জন্য সমালোচিত হলেও নিজের অবস্থান থেকে এক চুলও সরে আসেননি লুলা। বরং তার সরকার জাতিসংঘের সাহায্য সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএতে সহায়তার পরিমাণ বাড়িয়েছে এবং গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ও পূর্ণ মানবিক সহায়তা প্রবেশের দাবি জানিয়েছে।