ইশরাককে নিয়ে ইসির চূড়ান্ত বক্তব্য

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন (ইসি) তার দায়িত্ব সম্পন্ন করেছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। বিষয়টি নিয়ে আর কোনো চিঠি দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা কমিশন দেখছে না।

নির্বাচন কমিশন (ইসি)

বুধবার (৪ জুন) বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে অনুষ্ঠিত কমিশন সভা শেষে নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের একটি নির্বাচনী আবেদন এবং আপিল বিভাগের পর্যবেক্ষণ পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, আপিল বিভাগ নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা এবং নির্বাচন সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ইসির সর্বোচ্চ কর্তৃত্ব আবারও প্রতিষ্ঠিত করেছে। আদালত পাঁচটি মামলার রেফারেন্স দিয়েছেন, যার মধ্যে অন্যতম ‘বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বনাম নির্বাচন কমিশন’ ও ‘মাহমুদুল হক বনাম হেদায়েতুল্লাহ’। এসব রেফারেন্সে বলা আছে, নির্বাচন শুরু হয় তফসিল ঘোষণার মাধ্যমে এবং সম্পন্ন হয় গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে।

কমিশনার আরও বলেন, ইসি যে গেজেট প্রকাশ করেছিল, সেটি আদালত বাতিল করেনি। তাই কমিশন মনে করে, ইসি তার দায়িত্ব ইতোমধ্যেই শেষ করেছে।

শপথ গ্রহণ বিষয়ে তিনি বলেন, ফলাফল গেজেট আকারে প্রকাশ পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব। পরবর্তী কার্যক্রম- যেমন শপথ গ্রহণ ইত্যাদি, স্থানীয় সরকার সংক্রান্ত আইন অনুযায়ী সম্পন্ন হবে। ইসি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে যে চিঠি দিয়েছে, তাতে স্পষ্ট বলা হয়েছে—আইনি জটিলতা না থাকলে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম নিতে।

আরও কোনো চিঠি দেওয়া হবে কি না, জানতে চাইলে সানাউল্লাহ বলেন, এখন আর কোনো চিঠি দেওয়ার প্রয়োজন নেই। কারণ, আপিল বিভাগ আমাদের গেজেট বাতিল করেনি।

ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র পদে নির্বাচন হয় ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি। সেই নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম ও জালিয়াতির অভিযোগ ওঠে। নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন ইশরাক হোসেন।

গত বছরের ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মেয়র পদ থেকে শেখ ফজলে নূর তাপসকে অপসারণ করে সরকার। অন্যদিকে চলতি বছরের ২৭ মার্চ একটি নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল ইশরাক হোসেনকে গত সিটি নির্বাচনে বিজয়ী ঘোষণা করেন। এরপর ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে ২৭ এপ্রিল গেজেট প্রকাশ করে ইসি।

ইশরাককে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের রায় এবং ইসির গেজেটের কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মামুনুর রশিদ।

শুনানি নিয়ে রিট সরাসরি খারিজ করে ২২ মে আদেশ দেন হাইকোর্ট। ওই আদেশের বিরুদ্ধে মেয়র ঘোষণা ও গেজেটের কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে ২৬ মে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন রিট আবেদনকারী।

পরদিন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত লিভ টু আপিলটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান। এর ধারাবাহিকতায় আপিল বিভাগে শুনানির জন্য ওঠে। গত বৃহস্পতিবার শুনানি নিয়ে পর্যবেক্ষণসহ লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি করে আদেশ দেওয়া হয়।