হজের খুতবায় ফিলিস্তিনিদের জন্য দোয়া, বিশ্ব মুসলিমদের প্রতি ঐক্যের ডাক

পবিত্র হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা পালনের জন্য আরাফাতের ময়দানে সমবেত লাখো হাজির উদ্দেশে ঐতিহাসিক খুতবা দিয়েছেন মক্কার গ্র্যান্ড মসজিদের ইমাম শায়খ ড. সালেহ বিন আবদুল্লাহ বিন হুমাইদ। বৃহস্পতিবার (৫ জুন) মসজিদে নামিরা থেকে প্রদত্ত এই খুতবায় তিনি বিশ্বব্যাপী মুসলিম উম্মাহকে ঐক্য, তাকওয়া (আল্লাহভীতি) ও মানবতার প্রতি দৃঢ় থাকার আহ্বান জানান। বিশেষত, ফিলিস্তিনের নির্যাতিত মানুষের জন্য তিনি আল্লাহর দরবারে বিশেষভাবে দোয়া প্রার্থনা করেন। খবর এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের।

আরাফা ময়দান এবং শায়খ হুমাইদ

ইসলামী বর্ষপঞ্জির সবচেয়ে পবিত্র এই দিনে, বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে আসা ১৫ লক্ষাধিক হাজি আরাফাতের ময়দানে আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনায় মগ্ন থাকেন এবং আত্মিক পরিশুদ্ধির চেষ্টা করেন। শায়খ হুমাইদ তাঁর খুতবায় ইসলামের মূল ভিত্তি তাওহিদ বা একত্ববাদের ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, “ইবাদত একমাত্র আল্লাহরই প্রাপ্য—কোনো নবী, অলি বা নেক বান্দার নয়।” তিনি সালাত, সাওম, যাকাত ও হজের অপরিহার্যতা তুলে ধরে মুসলমানদের ধৈর্য, নম্রতা, সত্যবাদিতা ও কৃতজ্ঞতার মতো গুণাবলি অর্জনের উপদেশ দেন।

উন্নত চারিত্রিক গুণাবলির ওপর জোর দিয়ে শায়খ হুমাইদ বলেন, ‘ভালো ও মন্দ এক নয়। মন্দের জবাবে ভালো ব্যবহার করলে শত্রুও বন্ধুতে পরিণত হতে পারে।’ তিনি গীবত, বিদআত (ধর্মের নামে নতুন প্রচলন) ও শয়তানের প্ররোচনা থেকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান এবং প্রতিবেশী, পিতামাতা, এতিম, বিধবা ও অসহায়দের প্রতি সদয় হওয়ার তাগিদ দেন।

খুতবার এক পর্যায়ে ফিলিস্তিনের নির্যাতিত মুসলমানদের কথঅ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মজলুমদের পাশে দাঁড়ানো, ক্ষুধার্তকে খাওয়ানো এবং দান-খয়রাতে উদার হওয়া মুসলমানদের দায়িত্ব।’ তার এই বক্তব্যে উপস্থিত বহু হাজি আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।

বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত লাখো হাজির নির্বিঘ্নে হজ পালনের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য শায়খ হুমাইদ সৌদি সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

খুতবার পর হাজিরা আরাফাত থেকে মুজদালিফার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। সেখানে তাঁরা রাত্রিযাপন এবং শুক্রবার ‘রমিয়ে জামারাত’ অর্থাৎ শয়তানকে পাথর নিক্ষেপের প্রস্তুতি হিসেবে কঙ্কর সংগ্রহ করবেন।