ডোনাল্ড ট্রাম্প: সেনা না পাঠালে লস অ্যাঞ্জেলেস পুড়ে যেত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মঙ্গলবার দাবি করেছেন যে, তার ব্যাপক অভিবাসনবিরোধী অভিযানের বিরুদ্ধে চলমান গণবিক্ষোভের মধ্যে তিনি যদি আমেরিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর লস অ্যাঞ্জেলেসে সেনা না পাঠাতেন, তাহলে শহরটি ‘পুড়ে ছাই হয়ে যেত’।

ডোনাল্ড ট্রাম্প

ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ দাবি করেন, “গত তিন রাতে আমি যদি লস অ্যাঞ্জেলেসে ‘সেনা না পাঠাতাম’, তাহলে একসময়ের সুন্দর ও মহান এই শহরটি এখনই পুড়ে ছাই হয়ে যেত। যেমনটা অযোগ্য গভর্নর ও মেয়রের কারণে দাবানলে ২৫,০০০ বাড়ি পুড়ে গিয়েছিল।” জানুয়ারিতে দাবানলে লস অ্যাঞ্জেলেসের ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি এই মন্তব্য করেন।

ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম এবং লস অ্যাঞ্জেলেসের মেয়র ক্যারেন ব্যাসের বিরোধিতা উপেক্ষা করে ট্রাম্প লস অ্যাঞ্জেলেসে প্রায় ৪,০০০ ন্যাশনাল গার্ড সদস্য এবং ৭০০ মেরিন সেনা মোতায়েন করেছেন। নিউসম ও ব্যাস উভয়েই সতর্ক করে বলেছেন যে, এই পদক্ষেপ কেবল বিদ্যমান নাজুক পরিস্থিতিকে আরও উত্তেজিত করবে।

গভর্নর নিউসম সোমবার ঘোষণা করেছেন যে, প্রেসিডেন্টের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে দেশের সবচেয়ে জনবহুল রাজ্যটি ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা করছে। তিনি বলেন, এই পদক্ষেপ রাজ্যের সার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে ফেলেছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘এক্স’-এ তিনি বলেন, “তিনি যে অবৈধ আদেশে স্বাক্ষর করেছেন, তা তাকে তার ইচ্ছামতো যেকোনো রাজ্যে সেনাবাহিনী পাঠানোর ক্ষমতা দিতে পারে।”

তিনি আরও বলেন, “প্রত্যেক গভর্নরেরই—তিনি লাল বা নীল যে দলেরই হোন না কেন—এই চরম ক্ষমতার অপব্যবহার প্রত্যাখ্যান করা উচিত।” এখানে তিনি যথাক্রমে ট্রাম্পের রিপাবলিকান পার্টি এবং তার নিজের ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতৃত্বাধীন রাজ্যগুলোর কথা উল্লেখ করেন।

নিউসম বলেন, “এখানে অনেক অতিরঞ্জন রয়েছে, কিন্তু এটা তেমন কিছু নয়। এটি স্বৈরাচারী শাসনের দিকে একটি সুস্পষ্ট পদক্ষেপ, যা আমাদের প্রজাতন্ত্রের ভিত্তিকে হুমকির মুখে ফেলে। আমরা এটা হতে দিতে পারি না।”

শুক্রবার ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) এজেন্টরা স্থানীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে বসবাস করার সন্দেহে শত শত মানুষকে আটক করার পর এই বিক্ষোভ শুরু হয়। স্থানীয়দের বিরোধিতা সত্ত্বেও ট্রাম্প প্রশাসন এই অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

সমালোচকরা বলছেন, গত বছর হোয়াইট হাউসে ফেরার প্রচারণায় ট্রাম্প অপরাধীদের নির্বাসিত করার প্রতিশ্রুতি দিলেও, আইসিই এখন তাদের পরিবর্তে আইন মেনে চলা অনথিভুক্ত অভিবাসীদের লক্ষ্যবস্তু করছে, যারা স্থানীয় সম্প্রদায় এবং অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।