জাতীয় নির্বাচনে পোস্টার নিষিদ্ধ, ইসির চূড়ান্ত অনুমোদন

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণবিধি ২০২৫ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এতে প্রচারণায় পোস্টার সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব সামগ্রীর ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বিধিমালা লঙ্ঘনের শাস্তি হিসেবে সর্বোচ্চ দেড় লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।

নির্বাচন কমিশন (ইসি)

বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিশন সভায় খসড়াটি অনুমোদন পায়।

সভা শেষে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, আচরণবিধির খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে। পোস্টার ব্যবহারে সংস্কার কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে আমরাও একমত হয়েছি। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা শুধুমাত্র ব্যানার, ফেস্টুন ও পরিবেশবান্ধব উপকরণ ব্যবহার করতে পারবে।

তিনি আরও বলেন, প্রচারণায় বিলবোর্ড ব্যবহার, ভোটার স্লিপ প্রথা, টিশার্ট ও জ্যাকেটের সীমিত ব্যবহার, কমন প্ল্যাটফর্মে ইশতেহার পাঠ ও টিভি সংলাপ— এসব এবার প্রথমবারের মতো নতুনভাবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

সানাউল্লাহ বলেন, আচরণবিধিতে গুরুতর অপরাধের জন্য প্রার্থিতা বাতিলের বিষয়টি যুক্ত করা হয়েছে, যা আগে ছিল না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও নির্বাচনী প্রচারে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। বিশেষ করে বিদেশি অর্থে প্রচার চালানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, উচ্চ শব্দ নিয়ন্ত্রণে মাইকের শব্দমাত্রা ৬০ ডেসিবেলের মধ্যে রাখতে হবে। প্রচারের সময়সীমা তিন সপ্তাহ নির্ধারণ করা হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে যুক্ত প্রার্থীদের প্রার্থিতা চূড়ান্ত হওয়ার পর পদত্যাগ করতে হবে।

উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের সরকারি সুবিধা ব্যবহারে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। তারা সার্কিট হাউস, রেস্ট হাউস ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারবেন না এবং নির্বাচনী প্রচারেও অংশ নিতে পারবেন না।

সানাউল্লাহ বলেন, প্রার্থী ও রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনকালীন আচরণবিধি মেনে চলার অঙ্গীকারনামা বা হলফনামা দিতে হবে। নির্বাচনী প্ল্যাটফর্মে সকল প্রার্থীকে একত্রে ইশতেহার উপস্থাপনের সুযোগও রাখা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সীমানা পুনর্নির্ধারণের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে, আশা করা হচ্ছে আগামী সপ্তাহেই তা চূড়ান্ত করা হবে।

নির্বাচন কমিশনের এই নতুন উদ্যোগ নির্বাচনী পরিবেশে শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা এবং পরিবেশের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।