ইরানে হামলা: দুই সপ্তাহের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন ট্রাম্প!

মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি ইরানে সামরিক হামলা চালাবেন কি না, সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যেই নেবেন। ইরানের সঙ্গে আলোচনার সম্ভাবনা খোলা রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে তিনি উল্লেখ করেছেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প

শুক্রবার হোয়াইট হাউজে এক বিবৃতিতে ট্রাম্পের এই বার্তা পড়ে শোনান মুখপাত্র ক্যারোলিন লেভিট। আনাদোলু এজেন্সির এক প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়।

ট্রাম্পের এই ঘোষণাটি এমন এক সময়ে এলো, যখন ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে যুক্তরাষ্ট্রের যুক্ত হওয়া নিয়ে তার নিজ দল রিপাবলিকান পার্টিতেই তীব্র বিভক্তি দেখা দিয়েছে। দলের প্রভাবশালী নেতা টাকার কার্লসন, স্টিভ ব্যানন, সিনেটর র‌্যান্ড পল এবং কংগ্রেসওম্যান মার্জোরি টেইলর গ্রিনের মতো নেতারা সরাসরি সামরিক হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করছেন। তারা সতর্ক করে বলেছেন, এমন পদক্ষেপে ট্রাম্পের সরকার আরেকটি ব্যয়বহুল বৈদেশিক সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারে, যার বিরোধিতা করেই তিনি ক্ষমতায় এসেছিলেন।

তবে সেনেটর টেড ক্রুজ ও লিন্ডসে গ্রাহামের মতো প্রভাবশালী রিপাবলিকানরা ইরানের বিরুদ্ধে কঠোর সামরিক পদক্ষেপের পক্ষে জোর দিচ্ছেন।

হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের প্রধান লক্ষ্য হলো যেকোনো মূল্যে ইরানকে পরমাণু অস্ত্র অর্জন থেকে বিরত রাখা। মুখপাত্র লেভিট বলেন, ‘ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরির সব উপাদানই সংগ্রহ করে ফেলেছে; এখন শুধু তাদের সর্বোচ্চ নেতার অনুমোদনের অপেক্ষা। সেই সিদ্ধান্ত পেলেই কয়েক সপ্তাহের মধ্যে তারা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে সক্ষম হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ইরানের পরমাণু অস্ত্র অর্জন শুধু ইসরায়েল নয়, যুক্তরাষ্ট্র এবং সমগ্র বিশ্বের জন্যই অস্তিত্বের সংকট তৈরি করবে। এমনকি রাশিয়াও এই বিষয়ে একমত যে, ইরান পরমাণু অস্ত্র পেতে পারে না।’

তবে ইরান বরাবরই দাবি করে আসছে যে, তাদের পরমাণু কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ এবং পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কোনো উদ্দেশ্য তাদের নেই।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে যোগাযোগ অব্যাহত থাকার বিষয়টিও নিশ্চিত করেছেন লেভিট। তিনি জানান, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ ও ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচির মধ্যে সংলাপ হয়েছে। গত এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া এই আলোচনার কিছু সরাসরি এবং কিছু পরোক্ষভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু গত ১৩ জুন ইসরায়েল ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালালে তেহরান এর প্রতিক্রিয়ায় আলোচনা স্থগিত করে এবং পাল্টা হামলা চালায়।

ইরানি গণমাধ্যমের তথ্যমতে, ইসরায়েলের হামলায় ইরানে এ পর্যন্ত ৬৩৯ জন নিহত এবং এক হাজার ৩০০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। অন্যদিকে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলে অন্তত ২৫ জন নিহত ও কয়েকশ মানুষ আহত হয়েছে বলে তেল আবিব জানিয়েছে।

এ পরিস্থিতিতে, জার্মানি, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা জেনেভায় ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচির সঙ্গে বৈঠকে বসতে পারেন বলে জানিয়েছে জার্মান সংবাদ সংস্থা ডিপিএ। তবে এই বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র অংশ নেবে কি না, সে বিষয়ে হোয়াইট হাউস এখনো কিছু জানায়নি।