যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পারমাণবিক আলোচনার সম্ভাবনা নাকচ ইরানের

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নতুন করে কোনো পারমাণবিক আলোচনা শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে ইরান। বৃহস্পতিবার ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি এই কঠোর অবস্থান ব্যক্ত করেন।

আব্বাস আরাকচি

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরাকচি উল্লেখ করেন, তেহরান যখন ওয়াশিংটনের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিল, ঠিক তখনই যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ওপর ইসরায়েলি হামলাকে সমর্থন দেয় এবং পরবর্তীতে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে নিজেরাই সরাসরি বিমান হামলা চালায়। তিনি বলেন, ‘সাম্প্রতিক আলোচনাগুলোতে তারা আমাদের জাতির অধিকার ছেড়ে দেওয়ার জন্য প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করেছিল। যখন কিছু নির্দিষ্ট ঘটনা ঘটল, তখন তারা যুদ্ধ চাপিয়ে দেয় এবং অপরাধী জায়নবাদী শাসকগোষ্ঠীকে (ইসরায়েল) হামলা চালানোর জন্য লেলিয়ে দেয়।’

আব্বাস আরাকচি আরও যোগ করেন যে, যুক্তরাষ্ট্র আলোচনার সময় কূটনীতির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। এই তিক্ত অভিজ্ঞতা ইরানের ভবিষ্যৎ যেকোনো আলোচনার সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করবে। তবে তিনি বলেন, ‘কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে এবং আমি বেশ কয়েকজন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি।’

আগামী সপ্তাহে ইরানের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবিকেও তিনি নাকচ করে দেন। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নতুন কোনো পরোক্ষ আলোচনার আয়োজন করা হয়নি। তাদের বক্তব্যগুলো পরস্পরবিরোধী।’

উল্লেখ্য, গত ১৩ই জুন ইসরায়েল ইরানের সামরিক, পারমাণবিক এবং বেসামরিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালালে দুই দেশের মধ্যে ১২ দিনব্যাপী সংঘাত শুরু হয়। ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, এই হামলায় অন্তত ৬০৬ জন নিহত এবং ৫,৩৩২ জন আহত হয়েছেন। এর জবাবে তেহরানও ইসরায়েলের ওপর ক্ষেপণাস্ত্র ও চালকবিহীন বিমান (ড্রোন) দিয়ে প্রতিশোধমূলক হামলা চালায়। জেরুজালেমের হিব্রু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ইরানের হামলায় অন্তত ২৯ জন নিহত এবং ৩,৪০০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হন।

পরবর্তীতে মার্কিন মধ্যস্থতায় একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যা গত ২৪ জুন থেকে কার্যকর হয়েছে।