ছয় মাসে ২০ হাজার মামলা প্রত্যাহারের ঘোষণা

আগামী ছয় মাসের মধ্যে কমপক্ষে ২০ হাজার মিথ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। সরকারের এই সাহসী পদক্ষেপের ফলে হয়রানিমূলক মামলায় অভিযুক্ত লাখো মানুষ আইনি জটিলতা ও সামাজিক কলঙ্ক থেকে মুক্তি পাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রতীকী ছবি

বৃহস্পতিবার রাজধানীতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এই তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘আমি আশাবাদী, আগামী ছয় মাসে মন্ত্রণালয় কমপক্ষে ২০ হাজার মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করবে।’ তিনি আরও জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাজনৈতিক হয়রানি বন্ধে একটি দৃঢ় পদক্ষেপ নিয়েছে এবং ইতোমধ্যে প্রায় ১২ হাজার মামলা প্রত্যাহারের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে, যা সরাসরি প্রায় ৩ লাখ মানুষের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

আইন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ড. আসিফ নজরুলের নেতৃত্বে গঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি ২৮ মে পর্যন্ত মোট ১৬টি বৈঠক করেছে। এই বৈঠকগুলোর মাধ্যমে কমিটি ১১ হাজার ৪৪৮টি রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহারের জন্য প্রস্তাব দিয়েছে এবং এ সংক্রান্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

পূর্ববর্তী সরকারের আমলে বিরোধী রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের হয়রানির উদ্দেশ্যে দায়ের করা মামলাগুলো প্রত্যাহারের জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাছেও সহায়তা চেয়েছিল এই কমিটি। দলগুলোর পক্ষ থেকে মামলা প্রত্যাহারে সরকারের বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগ ওঠার পরই মন্ত্রণালয় এই বিষয়ে তৎপর হয়।

জেলা পর্যায়ের কমিটি এবং আইন মন্ত্রণালয়ের সলিসিটর শাখার পাঠানো তালিকা ও নথি পর্যালোচনা করে আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করছে। রাজনৈতিক দলগুলোকেও সরাসরি কমিটির কাছে মামলার তালিকা জমা দিয়ে এই প্রক্রিয়াকে আরও গতিশীল করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

তবে, মামলা প্রত্যাহারে বিলম্বের একটি প্রধান কারণ হিসেবে দলগুলোর অসহযোগিতাকে উল্লেখ করেছেন আইন উপদেষ্টা। ড. আসিফ নজরুল জানান, বিএনপি প্রায় ১৬ হাজার এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ১ হাজার ২০০ মামলার তালিকা জমা দিলেও সেগুলোর সঙ্গে এফআইআর বা চার্জশিটের মতো প্রয়োজনীয় নথি জমা দেয়নি। এ কারণে মামলাগুলো পর্যালোচনা করতে দেরি হচ্ছে।

অন্যদিকে, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ ২০ মে নাগাদ ৪৪টি মামলার একটি তালিকা জমা দিয়েছে। আইন উপদেষ্টা জানান, তাদের জমা দেওয়া নথি পর্যালোচনা করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

এই প্রেক্ষাপটে, মামলা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করতে মামলার তালিকাসহ এফআইআর ও চার্জশিটের কপি জমা দেওয়ার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আবারও আহ্বান জানিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়।