গাজায় ত্রাণপ্রার্থীদের ওপর ইসরায়েলি হামলা: গভীর উদ্বেগ জার্মানির

গাজায় ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের কাছে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর চলমান প্রাণঘাতী ইসরায়েলি হামলায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জার্মানি। সোমবার বার্লিন থেকে এই উদ্বেগের কথা জানানো হয়। দেশটির সরকার বলছে, খাদ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে সাধারণ মানুষের জীবনের ঝুঁকি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় এবং এ ধরনের ঘটনার সুস্পষ্ট তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।

স্টেফান কর্নেলিয়াস

জার্মান সরকারের মুখপাত্র স্টেফান কর্নেলিয়াস বার্লিনে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “খাদ্য বিতরণের সময় সহিংসতার ঘটনা, বিশেষ করে ইসরায়েল-সমর্থিত বিতর্কিত সাহায্য প্রকল্পের অধীনে ঘটা ঘটনাগুলো নিয়ে জার্মান সরকার গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। প্রায় প্রতিদিনই আমরা এমন খবর পাচ্ছি।”

তিনি আরও বলেন, “এইসব ঘটনায় নিয়মিত মৃত্যু ও আহতের ঘটনা ঘটছে। জার্মান সরকার পরিস্থিতির ওপর কড়া নজর রাখছে। অভাবী মানুষ খাবার সংগ্রহ করতে গিয়ে তাদের জীবন বিপন্ন করতে পারে না। তাই জার্মান সরকার এই ঘটনাগুলোর সুস্পষ্ট তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছে।”

কর্নেলিয়াস উল্লেখ করেন যে, ইসরায়েল জাতিসংঘের মাধ্যমে মানবিক সহায়তা পুনরায় চালুর অনুমতি দিলেও তা ‘খুবই সীমিত পরিসরে’।

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৭ মে থেকে ইসরায়েলি গুলিতে কমপক্ষে ৫০৩ জন ফিলিস্তিনি সাহায্যপ্রার্থী নিহত এবং আরও ৩,০০০ জন আহত হয়েছেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই দিন থেকে ইসরায়েল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘ ও প্রধান মানবিক সংস্থাগুলোকে পাশ কাটিয়ে একটি নিজস্ব ত্রাণ বিতরণ ব্যবস্থা চালু করেছে। সমালোচকরা এই উদ্যোগকে ‘মৃত্যুফাঁদ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন, কারণ খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী সংগ্রহ করতে আসা জনতার ওপর ইসরায়েলি সেনারা বারবার গুলি চালিয়েছে।

উল্লেখ্য, যুদ্ধবিরতির জন্য আন্তর্জাতিক আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় নৃশংস সামরিক অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে, যেখানে প্রায় ৫৬,০০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

গত নভেম্বরে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। এছাড়া, গাজায় চালানো অভিযানের জন্য ইসরায়েল আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও (আইসিজে) গণহত্যার মামলার মুখোমুখি হয়েছে।