যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের মাঝেই হামাসকে ধ্বংসের হুঙ্কার নেতানিয়াহুর

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ঘোষণা দিয়েছেন, ‘গাজা থেকে হামাসকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করা হবে এবং সব ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্ত করা হবে।’ বুধবার (২ জুলাই) আশকেলোনের ইএপিসি গ্যাস স্থাপনা দেওয়া এক ভাষণে তিনি এ দাবি করেন।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু

ভাষণে নেতানিয়াহু বলেন, ‘আর কোনো হামাস থাকবে না- এটাই শেষ। আমরা আমাদের সব জিম্মিকে মুক্ত করব এবং হামাসকে তার মূল থেকে নির্মূল করব। আগামী এক দশকে গ্যাস থেকে প্রায় ৩০০ বিলিয়ন শেকেল (ইসরায়েলি মুদ্রা) রাজস্ব আসবে।’

এই বক্তব্য এমন সময়ে এসেছে, যখন যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত একটি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে ইসরায়েল ও হামাস নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করছে। হামাস আলোচনার প্রতি ইতিবাচক সংকেত দিলেও বলেছে, কোনো চুক্তি গ্রহণযোগ্য হবে শুধুমাত্র যদি তা গাজায় যুদ্ধের সম্পূর্ণ অবসান নিশ্চিত করে। প্রায় ২১ মাস ধরে চলমান যুদ্ধের মধ্যে উভয়পক্ষের যুদ্ধবিরতি আলোচনা বারবার ব্যর্থ হয়েছে, বিশেষ করে যুদ্ধ শেষ করার শর্ত নিয়ে দ্বন্দ্বে।

হামাস এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে জানায়, তারা মধ্যস্থতাকারীদের কাছ থেকে যুদ্ধবিরতির একটি নতুন প্রস্তাব পেয়েছে এবং তা বাস্তবায়নে ‘সমঝোতার পথ খোঁজার’ জন্য আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।

হামাস বলেছে, তারা বাকি থাকা প্রায় ৫০ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিতে প্রস্তুত, যাদের অর্ধেকেরও কম জীবিত রয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এর বিনিময়ে তারা ইসরায়েলের গাজা থেকে সম্পূর্ণ প্রত্যাহার এবং যুদ্ধের অবসান চাইছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মঙ্গলবার যে প্রস্তাবটি প্রকাশ করেন, তাতে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির কথা বলা হয়েছে। এই সময়ে একটি স্থায়ী সমাধানে পৌঁছানোর চেষ্টার আহ্বান জানানো হয়েছে। ট্রাম্প জানান, ইসরায়েল এ প্রস্তাব মেনে নিয়েছে এবং হামাসকে ‘পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আগে’ এ চুক্তি গ্রহণ করতে অনুরোধ করেন।

হামাসের মুখপাত্র তাহের আল-নুনু বলেন, ‘আমরা একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে প্রস্তুত এবং এ বিষয়ে যথেষ্ট আন্তরিক।’ তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘শুধু সেই প্রস্তাবই গ্রহণযোগ্য হবে যা স্পষ্টভাবে যুদ্ধের সম্পূর্ণ অবসান নিশ্চিত করে।’

অন্যদিকে ইসরায়েল বলেছে, যুদ্ধের সমাপ্তি কেবল তখনই হবে যখন হামাস আত্মসমর্পণ করবে, অস্ত্র ত্যাগ করবে এবং গাজা ছাড়বে, যা হামাস দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করে আসছে।