সেনা সদর: গুমে জড়িত প্রমাণ মিললে সেনাসদস্যদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা

সেনাবাহিনীর কোনো সদস্য গুমের ঘটনায় জড়িত থাকলে এবং তদন্তে তার প্রমাণ মিললে তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সামরিক অপারেশনস পরিদপ্তরের কর্মকর্তা কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) দুপুরে সেনাসদরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর লোগো

তিনি বলেন, “ডেপুটেশনে যেসব সেনাসদস্য বিভিন্ন সংস্থায় কর্মরত ছিলেন, তাদের কিছুর বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ এসেছে। এই অভিযোগের তদন্ত চলছে। যদি সত্যতা মেলে, তাহলে যথাযথ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

সংবাদ সম্মেলনে 'মব ভায়োলেন্স' প্রসঙ্গে কর্নেল শফিকুল ইসলাম বলেন, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে হেনস্তার ঘটনায় চিহ্নিত ৬ জনের মধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করে সেনাবাহিনী। তবে আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পর সেনাবাহিনীর আর কিছু করার থাকে না।

তিনি আরও বলেন, যেকোনো সহিংসতা ও জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারী ঘটনার বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী সবসময় সক্রিয় ছিল এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।

চট্টগ্রামের পটিয়ায় সহিংসতার ঘটনার পর দ্রুত সেনাবাহিনী গিয়ে কক্সবাজার–চট্টগ্রাম মহাসড়কে অবরোধ মুক্ত করে জনদুর্ভোগ হ্রাস করে। একইসঙ্গে সাম্প্রতিক সময়ে সেনাবাহিনীর পরিচালিত অভিযানে ২৬টি অবৈধ অস্ত্র ও ১০০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।

গত আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত সেনাবাহিনী মোট ৯ হাজার ৬৯২টি অস্ত্র, ২ লাখ ৮৬ হাজার ৮৫৪ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে এবং গ্রেফতার করেছে ১৫ হাজার ৬৪৬ জন অপরাধী। এদের মধ্যে রয়েছে কিশোর গ্যাং, তালিকাভুক্ত ডাকাত ও মাদক চক্রের সদস্য।

ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনীর অভিযানে গত দুই সপ্তাহে ১৩টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার ও ২৩ জন সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ইউপিডিএফের একটি ক্যাম্প ধ্বংস এবং রাঙামাটিতে বিশেষ অভিযানে একজন সেনাসদস্য গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

আজ ভোরে কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মি (কেএনএফ)-এর বিরুদ্ধে চলমান অভিযানে গোলাগুলিতে সংগঠনটির দুজন সদস্য নিহত হন। এর মধ্যে একজন ‘মেজর’ পদবির কমান্ডার বলে জানানো হয়।

অভিযানে ৩টি আধুনিক এসএমজি, ১টি চায়নিজ রাইফেল, ৩৬৪ রাউন্ড গুলি, সামরিক সরঞ্জাম ও গুরুত্বপূর্ণ নথি উদ্ধার হয়েছে। অভিযান এখনও চলমান রয়েছে।

সেনা অভিযানের ফলে বান্দরবানের বিভিন্ন এলাকা থেকে কেএনএফের ভয়ে পালিয়ে যাওয়া বম জনগোষ্ঠীর ১৩৮ জন ইতোমধ্যে নিজ নিজ ঘরে ফিরে এসেছেন। সেনাবাহিনী তাদের নিরাপত্তা ও সহায়তা নিশ্চিত করছে।