ইউক্রেনে রাশিয়ার রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে: জার্মান ও ওলন্দাজ গোয়েন্দা সংস্থার দাবি

ইউক্রেনে রাশিয়া ক্রমবর্ধমান হারে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করছে বলে দাবি করেছে জার্মানি ও নেদারল্যান্ডসের গোয়েন্দা সংস্থা। শুক্রবার এক যৌথ বিবৃতিতে তারা এই আশঙ্কার কথা জানায়। তাদের মতে, এই পরিস্থিতি কেবল ইউক্রেনের জন্যই নয়, বরং সমগ্র ইউরোপের জন্য একটি বড় বিপদ তৈরি করছে।

ইউক্রেনের ছবি

জার্মানির গোয়েন্দা সংস্থা বিএনডি এবং নেদারল্যান্ডসের দুটি গোয়েন্দা সংস্থা এমআইভিডি ও এআইভিডি এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছে, আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও ইউক্রেনে রাশিয়ার রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহার তীব্রতর হচ্ছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ইউক্রেনে রাশিয়ার কাঁদানে গ্যাস ব্যবহারের বিষয়টি আগেই জানা ছিল। কিন্তু এখন এমআইভিডি, এআইভিডি এবং বিএনডি নিশ্চিতভাবে জানাচ্ছে যে, রাশিয়া ক্লোরোপিক্রিনও ব্যবহার করছে। এটি আরও শক্তিশালী রাসায়নিক উপাদান, যা আবদ্ধ স্থানে উচ্চ ঘনত্বে প্রয়োগ করা হলে প্রাণঘাতী হতে পারে।’

সংস্থাগুলো আরও জানায়, ‘রাসায়নিক অস্ত্র চুক্তির এটি একটি গুরুতর লঙ্ঘন, যা এই শ্বাসরোধকারী রাসায়নিক উপাদানের ব্যবহার যেকোনো পরিস্থিতিতে নিষিদ্ধ করে।’

এই গোয়েন্দা তথ্য প্রকাশের কারণ ব্যাখ্যা করে ওলন্দাজ প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুবেন ব্রেকলম্যানস বলেন, রাশিয়ার ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়াতে এবং রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহার যেন স্বাভাবিক বিষয়ে পরিণত না হয়, তা নিশ্চিত করতেই তারা এই পদক্ষেপ নিয়েছেন।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘এ ধরনের অস্ত্রের ব্যবহারের সীমা শিথিল করা কেবল ইউক্রেনের জন্যই নয়, বরং ইউরোপের বাকি অংশ এবং সমগ্র বিশ্বের জন্য বিপজ্জনক। এর জন্য রাশিয়ার ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ, দেশটিকে একঘরে করা এবং ইউক্রেনকে নিরবচ্ছিন্ন সামরিক সহায়তা দেওয়া প্রয়োজন।’

জার্মান ও ওলন্দাজ গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মূল্যায়ন অনুযায়ী, রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্ব এবং দেশটির তেজস্ক্রিয়, রাসায়নিক ও জীবাণু প্রতিরক্ষা সেনারা রাসায়নিক উপাদানের ব্যবহারকে সমর্থন করছে এবং সক্রিয়ভাবে এর প্রয়োগে সহায়তা করছে। সংস্থাগুলো দাবি করেছে, "রুশ সেনাদের দ্বারা কাঁদানে গ্যাস এবং ক্লোরোপিক্রিন উভয়ের ব্যবহার এখন একটি সাধারণ ও নিত্যনৈমিত্তিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং ভবিষ্যতেও এটি একটি হুমকি হিসেবে থেকে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।"

তাদের প্রতিবেদন অনুসারে, ‘রাশিয়া তার রাসায়নিক অস্ত্র কর্মসূচিতে বিপুল বিনিয়োগের পাশাপাশি এই সংক্রান্ত গবেষণার পরিসর বাড়াচ্ছে এবং কর্মসূচির জন্য নতুন বিজ্ঞানী নিয়োগ করছে।’

এই অভিযোগের বিষয়ে রুশ কর্তৃপক্ষ এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে এর আগেও রাশিয়া রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে এবং উল্টো ইউক্রেনীয় সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে অবৈধ অস্ত্র ব্যবহারের পাল্টা অভিযোগ তুলেছে।