ট্রাম্পের বিলকে ‘ঐতিহাসিক ডাকাতি’ বললেন নিউইয়র্কের মেয়র প্রার্থী

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি নতুন বিলকে ‘যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে অন্যতম বৃহৎ ডাকাতি’ বলে আখ্যায়িত করেছেন নিউইয়র্ক সিটির ডেমোক্র্যাট দলীয় মেয়র প্রার্থী জোহরান মামদানি। তার অভিযোগ, এই বিলের মাধ্যমে সাধারণ কর্মজীবী পরিবারগুলোকে বঞ্চিত করে শতকোটিপতিদের স্বার্থ রক্ষা করা হয়েছে।

জোহরান মামদানি

বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে মামদানি অভিযোগ করেন, ট্রাম্প এবং রিপাবলিকান আইনপ্রণেতারা সাধারণ মানুষের প্রয়োজনকে উপেক্ষা করে দেশের শীর্ষ ধনীদের সুবিধা দিয়েছেন। তিনি বলেন, “এই লুণ্ঠনের ফল হলো শীর্ষ ১ শতাংশ ধনীর জন্য ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ডলারের কর ছাড়—যাদের একেবারেই প্রয়োজন নেই, তাদের কাছে সম্পদের এই বিশাল হস্তান্তর। শতকোটিপতিরা ঠিক এ কারণেই আমাদের নির্বাচনে এত অর্থ ব্যয় করে।”

মামদানি বিলটিকে শীর্ষ ১ শতাংশ ধনীর কাছে সম্পদ হস্তান্তরের একটি বড় প্রক্রিয়া হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এটি ‘ক্ষুধার্তদের কাছ থেকে চুরি করে’। তিনি জানান, এই বিলের কারণে ৪ কোটি মানুষের পুষ্টি সহায়তা বন্ধ হবে, যার মধ্যে প্রতি ৫ জন শিশুর মধ্যে ১ জন রয়েছে। তিনি আরও বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ বন্ধ করে দিয়ে এটি ‘আমাদের ভবিষ্যৎ থেকেও চুরি করছে’।

এই মন্তব্যের আগে থেকেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে জোহরান মামদানির উত্তেজনা বাড়ছিল। বুধবার ট্রাম্প ঘোষণা দেন, তিনি মামদানিকে নিউইয়র্ক শহর ‘ধ্বংস’ করতে দেবেন না এবং কেন্দ্রীয় অভিবাসন প্রচেষ্টায় বাধা দিলে তাকে গ্রেপ্তারের হুমকি দেন।

এর জবাবে মামদানি বলেন, ট্রাম্পের মন্তব্য শুধু ‘আমাদের গণতন্ত্রের ওপর আক্রমণ’ নয়, বরং এটি নিউইয়র্কের প্রতিটি নাগরিকের জন্য একটি সতর্কবার্তা, যারা চুপ থাকতে রাজি নন। তিনি প্রেসিডেন্টকে ‘ভীতি প্রদর্শনের’ কৌশল ব্যবহারের জন্য অভিযুক্ত করেন।

এদিকে, বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদ সামান্য ব্যবধানে (২১৮-২১৪ ভোটে) একটি ব্যাপক কর-ছাড় ও ব্যয় বিল পাস করে এবং স্বাক্ষরের জন্য প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে পাঠিয়েছে। এই আইনটি জাতীয় ঋণের বোঝা ৩.৪ ট্রিলিয়ন ডলার বাড়াবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এটি ট্রাম্প প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ অভ্যন্তরীণ লক্ষ্যগুলো পূরণ করবে।

ওয়াশিংটন থেকে আইওয়ার উদ্দেশে রওনা হওয়ার সময় ট্রাম্প প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার মাইক জনসন এবং সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা জন থুনকে ধন্যবাদ জানান। তিনি এই আইনকে ‘এ যাবতকালে স্বাক্ষরিত হওয়া সবচেয়ে বড় বিল’ হিসেবে অভিহিত করে দাবি করেন, এটি ‘দেশকে একটি রকেট জাহাজে পরিণত করবে’।

তিনি জানান, স্থানীয় সময় শুক্রবার বিকাল ৫টায় বিলটিতে স্বাক্ষর করার পরিকল্পনা করছেন। তিনি আরও যোগ করেন, “আমরা যখন স্বাক্ষর করব, তখন বি-২, এফ-২২ এবং এফ-৩৫ এর মতো সুন্দর বিমানগুলো আমাদের মাথার ওপর দিয়ে উড়ে যাবে।”