ফখরুল: যারা নির্বাচন বিলম্বিত করতে চায়, তারা গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তি নয়
- Details
- by ২৪ ডেস্ক
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, যারা নির্বাচন বিলম্বিত করতে চায়, তারা নিঃসন্দেহে গণতন্ত্রকামী বা জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তি নয়।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
রবিবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ দ্রুত একটি নির্বাচন চায়। আমরা আগেও বহুবার বলেছি, আজও বলছি। যারা নির্বাচন পেছাতে চায়, তারা নিশ্চিতভাবে গণতান্ত্রিক শক্তি নয় এবং জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের পক্ষের শক্তিও নয়।’
মির্জা ফখরুল জানান, লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও তারেক রহমানের মধ্যে আলোচনার ভিত্তিতে দেশ নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাবে বলে তার দল বিশ্বাস করে।
তিনি অভিযোগ করেন, একটি সুবিধাবাদী মহল বিএনপিকে হেয় করার জন্য মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে। বিএনপি নেতা বলেন, ‘কয়েকজন ব্যক্তি ও গোষ্ঠী জনমনে নেতিবাচক ধারণা তৈরির জন্য বিএনপিকে জড়িয়ে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে। কিন্তু জনগণ তাতে সাড়া দিচ্ছে না।’
তিনি আরও বলেন, দেশের মানুষ বিএনপিকে খুব ভালোভাবে চেনে এবং জানে যে বাংলাদেশের সমস্ত ভালো অর্জনে দলটি সবসময় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এটি বোঝা গুরুত্বপূর্ণ যে বিএনপি একটি পরীক্ষিত উদার গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, যা নির্বাচন ও জনগণের ভোটের মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিতে চায়। আমরা বিপ্লব বা অন্য কোনো পথে ক্ষমতায় আসতে চাই না। আমাদের উদ্দেশ্য নিয়ে কারও কোনো সন্দেহ থাকার অবকাশ নেই। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য আমরা ১৫ বছর ধরে সংগ্রাম করেছি।’
তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, কিছু গণমাধ্যম ও নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তি সংস্কার নিয়ে বিএনপির অবস্থান সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছে, যা সঠিক নয়। তিনি বলেন, ‘বিএনপির সংস্কার অঙ্গীকার নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো সুযোগ নেই, কারণ বিএনপিই ২০১৬ সালে সর্বপ্রথম জোরালোভাবে সংস্কারের কথা বলেছিল।’
তিনি মনে করিয়ে দেন, খালেদা জিয়া ২০১৬ সালে ‘রূপকল্প-২০৩০’ এর মাধ্যমে প্রথম সংস্কারের কথা বলেছিলেন। এরপর বিএনপি ২৭-দফা ও পরে ৩১-দফা সংস্কার প্রস্তাব ঘোষণা করে। তিনি বলেন, ‘আমরা সংস্কারের বিষয়ে আন্তরিক বলেই এই ৩১-দফা প্রস্তাবনা জনগণের কাছে এবং সুশীল সমাজের কাছে তুলে ধরতে দেশজুড়ে অসংখ্য কর্মসূচি পালন করেছি।’
এরপরেও একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী বিএনপিকে সংস্কারবিরোধী হিসেবে চিত্রিত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। তার মতে, ‘এটি জনগণকে বিভ্রান্ত করার একটি পরিকল্পিত প্রচারণার অংশ।’
মির্জা ফখরুল বলেন, প্রায় দেড় দশক ধরে কর্তৃত্ববাদী শাসনের বিরুদ্ধে অবিরাম সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বিএনপি কেবল টিকেই থাকেনি, বরং আরও শক্তিশালী ও জনপ্রিয় হয়েছে। তিনি বলেন, ‘শত শত শহীদের রক্ত, গুম ও খুনের শিকার হওয়া আমাদের সহকর্মী কর্মীদের ত্যাগ এবং লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মীর অবর্ণনীয় দুর্ভোগ বিএনপির ঐক্যকে আরও শক্তিশালী করেছে।’
এই ঐক্যবদ্ধ শক্তি, ব্যাপক জনসমর্থন এবং দেশ শাসনের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা নিয়ে বিএনপি বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালনে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি দাবি করেন, কর্তৃত্ববাদ ও ফ্যাসিবাদের উত্থান মোকাবিলায় তাদের দল অত্যন্ত সক্রিয়। তিনি বলেন, ‘কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে অতিরিক্ত ক্ষমতা দেওয়া যেমন ফ্যাসিবাদের জন্ম দেয়, তেমনি নির্বাচিত সরকার ও সংসদের ক্ষমতা কেড়ে নেওয়াও রাষ্ট্রকে দুর্বল, বিভক্ত ও অকার্যকর করে তোলে।’
মির্জা ফখরুল দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে হাজারো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত পরিবর্তনের এই সুযোগকে গঠনমূলকভাবে কাজে লাগানোর জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আসুন, আমরা ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ, ’৯০-এর গণঅভ্যুত্থান এবং ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের ছাত্র-শ্রমিক-জনতার আন্দোলনের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে একটি বৈষম্যহীন, মানবিক ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ না হই।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও সালাহউদ্দিন আহমেদ।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.