বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে ‘দ্বিমুখী নীতি’ প্রদর্শনের জন্য অভিযুক্ত করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, জাতীয় নির্বাচন পেছানোর কথা বলে জামায়াত আবারও জনগণের মনোভাব বুঝতে ব্যর্থ হয়েছে।

bnp senior joint secretary general ruhul kabir rizviরুহুল কবির রিজভী

রবিবার পবিত্র আশুরা উপলক্ষে বিএনপির নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক দোয়া অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময় রুহুল কবির রিজভী এসব মন্তব্য করেন।

জামায়াতের প্রতি পরোক্ষ ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, “একদিকে তারা নির্বাচন পেছানোর জন্য আহ্বান জানাচ্ছে, অন্যদিকে কিছু এলাকায় প্রার্থী পরিচিতি ও মনোনয়ন দিচ্ছে। একেই আমরা দ্বিমুখী নীতি বলি।”

তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, “আপনারা (জামায়াত) নির্বাচন পেছাতে চান কেন? বর্তমান সরকারের মেয়াদ ৫ আগস্ট এক বছর পূর্ণ হবে। যদি ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হয়, তবে প্রায় দেড় বছর সময় পাওয়া যাবে। প্রয়োজনীয় সংস্কার বাস্তবায়নের জন্য এই সময় কি যথেষ্ট নয়?”

গণমাধ্যমের প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করে রিজভী বলেন, জামায়াত ৩৩ থেকে ৩৪টি আসনে প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছে, অথচ এখন তারা নির্বাচন পেছানোর দাবি করছে। তিনি বলেন, “তারা একদিকে মনোনয়ন দিচ্ছে, আবার অন্যদিকে নির্বাচন পেছানোর ডাক দিচ্ছে।”

রুহুল কবির রিজভী বলেন, জামায়াতে ইসলামী ঐতিহাসিকভাবেই জনগণের মনোভাব বুঝতে ব্যর্থ হয়েছে। তার কথায়, “তারা যদি জনগণের মনোভাব বুঝতো, তাহলে ১৯৭১ সালে (মুক্তিযুদ্ধের) বিরোধিতা করত না। তারা শেখ হাসিনার সঙ্গে ১৯৮৬ সালের নির্বাচনেও এরশাদের অধীনে যোগ দিত না। তারা সবসময় জনগণের ইচ্ছাকে উপেক্ষা করেছে। সত্য হলো, জনগণ তাদের কাছে কোনো বিষয়ই নয়।”

তিনি অভিযোগ করেন, জামায়াত কেবল নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে কাজ করে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিজেদেরই ক্ষতি করে। “এ কারণেই তারা যখন একা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে, তখন দুই বা তিনটি আসনের বেশি জিততে পারে না।”

বিএনপির এই নেতা বলেন, এই দেশের অধিকাংশ মানুষ মুসলমান এবং মুসলমানরা সবসময় তাদের কথা রাখে। কিন্তু তারা (জামায়াত) কখনোই তাদের কথা রাখে না। বেগম খালেদা জিয়াই তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছেন।

তিনি আরও বলেন, দেশের মানুষ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে নির্বাচন দেখতে চায়। আমাদের অনেক নেতা-কর্মী একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য জীবন দিয়েছেন এবং নির্যাতন সহ্য করেছেন।

সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য যথেষ্ট সময় থাকা সত্ত্বেও কেন নির্বাচন পেছানোর কথা উঠছে, সেই যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন রিজভী। তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা সামাজিক অপরাধ, রাজনৈতিক নয় এবং এসব অপরাধ দমন করে অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দায়িত্ব। এর সঙ্গে নির্বাচনের কী দোষ?

তিনি সন্দেহ প্রকাশ করে বলেন, কিছু দল হয়তো নিজেদের ভাবমূর্তি বৃদ্ধি বা রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্যই নির্বাচন পেছাতে চাইছে।

তবে রিজভী আশা প্রকাশ করে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার কোনো নির্দিষ্ট দল বা ব্যক্তিকে সুবিধা দেওয়ার জন্য অতিরিক্ত সময় দেবে না, ‘আমরা আশা করি অন্তর্বর্তী সরকার কারও পক্ষে যাবে না। তারা আমাদের আলোচিত সময়সীমা মেনেই চলবে এবং একটি নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে। রাষ্ট্রীয় দায়িত্বের অনেক দিক নির্বাচিত কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যুক্ত।’

ঐতিহাসিক কারবালার যুদ্ধের কথা উল্লেখ করে রিজভী বলেন, “ইমাম হোসেন অন্যায় ও স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করে জীবন দিয়েছিলেন। আমি জানি না আজকের কিছু রাজনৈতিক দল সেই ঘটনা থেকে কোনো শিক্ষা নিয়েছে কি না।”

তিনি বলেন, “কিছুদিন আগে তারা (জামায়াত) বলেছিল নির্বাচনের পরিবেশ নেই। এখন তারা নির্বাচন পেছাতে চায়। কেন? গণতন্ত্রের জন্য ১৫-১৬ বছরের সংগ্রামের পর নির্বাচন কী অন্যায় করেছে? সকল ত্যাগ, সকল নিপীড়ন—গুম, খুন, পাশবিক নির্যাতন—সবকিছুর লক্ষ্যই ছিল একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন।”

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.