ইরান: ইসরায়েলের জবাবদিহি নিশ্চিত না হলে বিশ্বকে ভুগতে হবে

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, ইরানের ওপর চালানো আক্রমণের জন্য যদি ইসরায়েলকে জবাবদিহির আওতায় আনা না হয়, তবে এর পরিণতি পুরো অঞ্চল এবং বিশ্বকে ভোগ করতে হবে।

আব্বাস আরাঘচি

রবিবার ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে অনুষ্ঠিত ১৭তম ব্রিকস সম্মেলনে দেওয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন। আব্বাস আরাঘচি তার বক্তব্যে মানবাধিকার ও মানবিক আইনসহ আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের জন্য ইসরায়েল এবং যুক্তরাষ্ট্রকে জবাবদিহি করানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম প্রেস টিভির সূত্রে জানা যায়, তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের এই আগ্রাসী যুদ্ধের পরিণতি কোনো একটি দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং ‘পুরো অঞ্চল এবং এর বাইরেও সবাইকে ভুগতে হবে।’

এই শীর্ষ কূটনীতিক জোর দিয়ে বলেন, ‘আমাদের পারমাণবিক স্থাপনার ওপর যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের আক্রমণ ছিল পরমাণু অস্ত্রবিস্তার রোধ চুক্তি (এনপিটি) এবং জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব ২২৩১-এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। ওই প্রস্তাবেই ২০১৫ সালে সর্বসম্মতিক্রমে ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচির অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল।’

তিনি আরও বলেন, ‘ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনাকে লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে এই আগ্রাসনে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তীকালের সম্পৃক্ততা এটা প্রমাণ করে যে, ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের আগ্রাসী যুদ্ধে মার্কিন সরকারের পূর্ণ সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।’

উল্লেখ্য, বিশ্বের উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর জোট ব্রিকসের ১৭তম সম্মেলন রবিবার রিও ডি জেনিরোতে শুরু হয়েছে। বৈশ্বিক নিরাপত্তা, শাসনব্যবস্থার সংস্কার এবং গ্লোবাল সাউথের দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা জোরদার করার মতো বিষয়গুলো এই সম্মেলনের আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে।

ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে সংঘাত শুরু হয় গত ১৩ জুন। ১২ দিনের ওই সংঘাতে ইসরায়েল ইরানের সামরিক, পারমাণবিক এবং বেসামরিক স্থাপনায় বিমান আক্রমণ চালালে অন্তত ৯৩৫ জন নিহত হন। ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, এই আক্রমণে ৫,৩৩২ জন আহত হয়েছেন।

এর প্রতিক্রিয়ায় তেহরানও পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র ও চালকবিহীন বিমান (ড্রোন) দিয়ে আক্রমণ চালায়। জেরুজালেমের হিব্রু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, এই পাল্টা আক্রমণে অন্তত ২৯ জন নিহত এবং ৩,৪০০ জনেরও বেশি আহত হন।

গত ২৪ জুন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় একটি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার মাধ্যমে এই সংঘাতের অবসান ঘটে।