কঠোর অবস্থানে বিটিআরসি, বন্ধ হচ্ছে ৬৭ লাখ সিম!

দেশে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড দমনে এক কঠোর পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে প্রায় ২৬ লাখ গ্রাহকের হাতে থাকা আনুমানিক ৬৭ লাখ অতিরিক্ত মোবাইল সিম নিষ্ক্রিয় করা হবে। মূলত, চাঁদাবাজি, ব্ল্যাকমেইল, জালিয়াতি এবং সরকারি কর্মকর্তাদের নম্বর ক্লোন করে প্রতারণার মতো ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বিটিআরসির নতুন নিয়ম অনুযায়ী, একজন গ্রাহক তার জাতীয় পরিচয়পত্রের বিপরীতে সর্বোচ্চ ১০টি সিম ব্যবহার করতে পারবেন। আগামী ১৫ আগস্ট ২০২৫ থেকে এই নির্দেশনা কার্যকর হবে। এর আগে একজন গ্রাহকের জন্য সর্বোচ্চ ১৫টি সিম ব্যবহারের সুযোগ ছিল।

কীভাবে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে?

যাদের নামে ১০টির বেশি সিম নিবন্ধিত আছে, তাদের অতিরিক্ত সিমগুলো ধাপে ধাপে বন্ধ করে দেওয়া হবে। এই প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের জন্য বিটিআরসি কয়েকটি ধাপে অগ্রসর হবে:

তালিকা হস্তান্তর: বিটিআরসি মোবাইল অপারেটরদের কাছে ১০টির বেশি সিম ব্যবহারকারী গ্রাহকদের একটি তালিকা সরবরাহ করবে।

গ্রাহকের সঙ্গে যোগাযোগ: অপারেটরগুলো তালিকা অনুযায়ী গ্রাহকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জেনে নেবে, তারা কোন ১০টি সিম চালু রাখতে চান।

অগ্রাধিকার নির্ধারণ: গ্রাহকের মতামত নেওয়ার সময় সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত এবং মোবাইল ব্যাংকিং সেবার সঙ্গে যুক্ত নম্বরগুলোকে সচল রাখার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

কেন এই সিদ্ধান্ত?

বিটিআরসির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে সক্রিয় সিমের সংখ্যা ১৮ কোটি ৬২ লাখের বেশি হলেও প্রকৃত গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ৬ কোটি ৭৫ লাখ। এর মধ্যে ৮০ শতাংশের বেশি গ্রাহক ৫টির কম সিম ব্যবহার করেন। মাত্র ৩ শতাংশ গ্রাহক ১১টির বেশি সিম ব্যবহার করেন, যাদের একটি অংশ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে এসব সিম ব্যবহার করছে বলে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত বৈঠকে উঠে আসে। মূলত এই ক্ষুদ্র অংশের অপরাধ প্রবণতা রুখতেই সিমের সংখ্যা কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এই বিশাল পরিবর্তন কার্যকর করার আগে গ্রাহকদের মধ্যে সচেতনতা তৈরির জন্য মোবাইল অপারেটরদের প্রচার কার্যক্রম চালানোর নির্দেশ দিয়েছে বিটিআরসি। আগামী ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে এ সংক্রান্ত চূড়ান্ত নির্দেশনা জারি করা হবে।