ফখরুল: ৩৫% মার্কিন শুল্কে পোশাক খাত ভেঙে পড়বে

বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাকের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তে দেশ ও জাতি ‘গুরুতর বিপদে’ পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, এই শুল্ক কার্যকর হলে দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড হিসেবে পরিচিত তৈরি পোশাক খাত ভেঙে পড়বে।

আজ জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা সত্যিই বিপদে আছি—দেশ ও জাতি গুরুতর বিপদে পড়েছে। যুক্তরাষ্ট্র আমাদের রপ্তানির ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। আমাদের প্রধান রপ্তানি পণ্য হলো তৈরি পোশাক। এই খাতে যদি ৩৫ শতাংশ শুল্ক বসে, তবে এটি ভেঙে পড়বে। এর অর্থ হলো, আমাদের অর্থনীতির মেরুদণ্ড ভেঙে যাবে। এটি একটি অত্যন্ত গুরুতর সমস্যা।’

এ বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ভূমিকার দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এ বিষয়ে কতটা মনোযোগ দিয়েছে, তা আমি নিশ্চিত নই। কিন্তু তাদের আরও বেশি মনোযোগ দেওয়া উচিত ছিল এবং এই বিষয়ে সবচেয়ে যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়ে কাজ করা উচিত ছিল।’

তবে তিনি এখনো আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের সুযোগ আছে বলে মনে করেন। ফখরুল বলেন, ‘হয়তো এখনো সময় শেষ হয়ে যায়নি। আমাদের শিল্পগুলো যেন টিকে থাকে, আমাদের নারীদের কর্মসংস্থান যেন নষ্ট না হয় এবং আমাদের অর্থনীতির যেন ক্ষতি না হয়—তাদের অবশ্যই এই বিষয়টি দেখতে হবে।’

আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের দেওয়া নির্দেশনায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘আমি এই মঞ্চ থেকে অধ্যাপক ইউনূসকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। এটি একটি অত্যন্ত ইতিবাচক অগ্রগতি এবং এ জন্য তিনি ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আশা করি, নির্বাচন কমিশন দ্রুত এই প্রস্তুতিগুলো সম্পন্ন করবে এবং নির্বাচন অনুষ্ঠানের উপযোগী একটি পরিবেশ তৈরি করবে। আমরা চাই, নির্বাচনটি যেন অবাধ, সুষ্ঠু ও সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়।’

বিএনপির বিরুদ্ধে সংস্কারবিরোধী প্রচারণার অভিযোগ খণ্ডন করে দলটির মহাসচিব বলেন, ‘সংস্কার আমাদের রক্তে, আমাদের জন্মই হয়েছে সংস্কারের মধ্য দিয়ে। তাই আজ যদি কেউ বলে বিএনপি সংস্কারে বাধা দিচ্ছে, আমি সেই বক্তব্যকে একটি চরম অন্যায় অভিযোগ হিসেবে বিবেচনা করব। এর চেয়ে বড় সত্যের অপলাপ আর কিছু হতে পারে না।’

সীমান্তে হত্যা ও পুশ-ইনের বিষয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই বিষয়ে আমি সরকারকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ভারতের সঙ্গে জোরালোভাবে দর-কষাকষির মাধ্যমে চূড়ান্ত পর্যায়ে যাওয়ার আহ্বান জানাব। আমরা এ নিয়ে যথেষ্ট জোরালোভাবে কথা বলছি না।’

তিনি সাংবাদিকদের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরার আহ্বান জানান।