সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় মালয়েশিয়ার সঙ্গে কাজ করবে বাংলাদেশ

মালয়েশিয়ায় সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি নাগরিক গ্রেপ্তার হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতার ভিত্তিতে তদন্ত পরিচালনার আশ্বাস পাওয়া গেছে। কুয়ালালামপুরে মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাজী মোহাম্মদ বিন হাজী হাসানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।

শুক্রবার ৩২তম আসিয়ান রিজিওনাল ফোরামের (এআরএফ) মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের সাইডলাইনে এই গুরুত্বপূর্ণ আলোচনাটি অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে ড. তৌহিদ হোসেন সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, এই অভিযোগের বিষয়ে বাংলাদেশ নিজস্ব তদন্ত পরিচালনা করতে চায় এবং এ জন্য মালয়েশিয়ার কাছ থেকে তথ্য ও অনুসন্ধান বিনিময়ের মাধ্যমে সার্বিক সহযোগিতা প্রয়োজন। জবাবে মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

কেবল মালয়েশিয়ার সঙ্গেই নয়, এই ফোরামকে কেন্দ্র করে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দেশের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন। যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র সচিব ডেভিড ল্যামির সঙ্গে আলোচনায় বাংলাদেশের চলমান সংস্কার কার্যক্রম, রোহিঙ্গা সংকট এবং স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের পর সহযোগিতা পাওয়ার মতো বিষয়গুলো উঠে আসে। এছাড়া নিউজিল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইনস্টন পিটার্স, শ্রীলঙ্কার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিজিথা হেরাথ এবং দক্ষিণ কোরিয়ার উপমন্ত্রী পার্ক ইউনজুর সঙ্গেও দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাঁর আলোচনা হয়।

এবারের আসিয়ান রিজিওনাল ফোরামের মূল অধিবেশনে দেওয়া বক্তব্যে ড. তৌহিদ হোসেন রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়টি জোরালোভাবে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এই সংকট কেবল বাংলাদেশের জন্য নয়, পুরো অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্যই হুমকিস্বরূপ। তাই এর সমাধানে আসিয়ান দেশগুলোর আরও বেশি মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন। একই সঙ্গে তিনি আসিয়ানের ‘সেক্টোরাল ডায়ালগ পার্টনার’ হওয়ার জন্য বাংলাদেশের আবেদনের বিষয়টি ইতিবাচকভাবে বিবেচনার জন্যও সদস্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ২০০৬ সাল থেকে ২৭ সদস্যের এই নিরাপত্তা জোট আসিয়ান রিজিওনাল ফোরামের (এআরএফ) সদস্য। বর্তমানে বাংলাদেশ এআরএফ-এর দুটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র—‘সন্ত্রাসবাদ ও আন্তর্জাতিক অপরাধ দমন’ এবং ‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় ত্রাণ’—এর কো-চেয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে। ফোরামের পরবর্তী মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক ২০২৬ সালে ম্যানিলায় অনুষ্ঠিত হবে।

এই সফরে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মো. ফরহাদুল ইসলামসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।