অবাধ চলাচলের ইউরোপে নিয়ন্ত্রণের দেয়াল, কী ভাবছে জার্মানি?

জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্ৎস মঙ্গলবার তার সরকারের সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ নীতির পক্ষে জোরালো অবস্থান ব্যক্ত করেছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, অভিবাসন বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) জুড়ে একটি সমন্বিত সমাধানে না পৌঁছানো পর্যন্ত এই ব্যবস্থা বলবৎ থাকবে।

জার্মানির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ বাভারিয়া সফরের সময় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, সীমান্ত নিয়ন্ত্রণের এই পদক্ষেপ ইইউর ভিসামুক্ত শেনগেন এলাকার অখণ্ডতাকে ক্ষুণ্ণ করতে বা সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সহযোগিতায় বাধা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়নি।

মের্ৎস বলেন, ‘আমি একটি ইউরোপীয় সমাধানের জন্য অত্যন্ত আশাবাদী এবং এর ওপর আস্থা রাখছি। ততদিন পর্যন্ত, দুর্ভাগ্যবশত সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ জরুরি থাকবে। তবে এটি কেবল ততটুকুই থাকবে, যতটুকু সত্যিকার অর্থে প্রয়োজন। আমরা শেনগেনের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে চাই না; আমরা ইউরোপে পণ্য ও মানুষের অবাধ চলাচল অক্ষুণ্ণ রাখতে চাই।’

এই রক্ষণশীল নেতা আরও জোর দিয়ে বলেন, জার্মানি ইইউর একক বাজার এবং শেনগেন এলাকাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয় এবং ইউরোপের এই মৌলিক নীতিগুলোকে দুর্বল করার কোনো অভিপ্রায় তাদের নেই।

গত ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনী প্রচারণার সময় চ্যান্সেলর মের্ৎসের রক্ষণশীল দল ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্র্যাটস অনিয়মিত অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। মে মাসে জোট সরকার গঠনের পর তারা প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে আরও ব্যাপক সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু করে, যদিও এই দেশগুলো ইইউর সদস্য।

পোল্যান্ডের সঙ্গে জার্মানির এই সীমান্ত নিয়ন্ত্রণের ফলে বার্লিন ও ওয়ারশ'র মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। এর প্রতিক্রিয়ায় চলতি মাসে পোল্যান্ড সরকারও পাল্টা অস্থায়ী সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু করেছে। পোল্যান্ডের শীর্ষস্থানীয় রাজনীতিবিদরা জার্মানির বিরুদ্ধে অভিবাসীদের নিজেদের ভূখণ্ড থেকে পোল্যান্ডে ঠেলে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন।

উল্লেখ্য, জার্মানির সকল প্রতিবেশী রাষ্ট্রই ইউরোপের ভিসামুক্ত শেনগেন এলাকার অংশ। শেনগেনভুক্ত রাষ্ট্রগুলো কেবল বড় কোনো আন্তর্জাতিক আয়োজন বা জনশৃঙ্খলার জন্য গুরুতর হুমকির মতো ব্যতিক্রমী পরিস্থিতিতেই অস্থায়ী সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ চালু করতে পারে।