‘লাথি মেরে বের করে দেবো’: প্রকৌশলীকে জামায়াত নেতার হুমকি, ভিডিও ভাইরাল

‘লাথি মেরে তোকে অফিস থেকে বের করে দেবো’—কুমিল্লার মুরাদনগরে উপজেলা প্রকৌশলীকে উদ্দেশ্য করে বলা এই কথাগুলোর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এই হুমকির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি মাহবুব আলম মুন্সীর বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলা প্রকৌশলী কাজী ফয়সাল বারী পূর্ণের নিজ অফিসে।

ভাইরাল হওয়া সংক্ষিপ্ত ভিডিও ক্লিপটিতে দেখা যায়, প্রকৌশলী কাজী ফয়সাল বারী পূর্ণ তার চেয়ারে বসে আছেন এবং তার টেবিলের অপর পাশে দাঁড়িয়ে উত্তেজিতভাবে কথা বলছেন মাহবুব আলম মুন্সী। এক পর্যায়ে তিনি প্রকৌশলীকে লাথি মারার হুমকি দেন।

ঘটনার সূত্রপাত একটি রাস্তা সংস্কারের আবেদন নিয়ে। উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের বাসকাইট থেকে প্রান্তি বাজার পর্যন্ত একটি বেহাল রাস্তার সংস্কারের জন্য মাহবুব আলম মুন্সীসহ কয়েকজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে যান। ইউএনও আবদুর রহমান তাদের আবেদনটি নিয়ে উপজেলা প্রকৌশলীর কাছে পাঠান।

অভিযুক্ত মাহবুব আলম মুন্সীর ভাষ্যমতে, প্রকৌশলীর কক্ষে রাস্তাটির গুরুত্ব বোঝাতে গেলে তিনি গড়িমসি করেন। প্রায় ১০ মিনিটের তর্ক-বিতর্কের এক পর্যায়ে প্রকৌশলী বলেন, ‘যদি রাস্তা ভেঙে পানি জমে থাকে, তাহলে আপনারা গিয়ে বালতি দিয়ে তা পরিষ্কার করেন’। মাহবুব আলমের দাবি, এমন কথায় উত্তেজিত হয়েই তিনি ওই হুমকি দেন। তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘পুরো ঘটনা আড়াল করে আমাকে হেয় করার জন্যই মাত্র ১০ সেকেন্ডের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়ানো হয়েছে।’

এদিকে, এই অপ্রীতিকর ঘটনাটি বেশি দূর গড়ায়নি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে বিষয়টি দ্রুত সমাধান করা হয়েছে। ইউএনও আবদুর রহমান জানান, ‘ঘটনাটি জানতে পেরে আমি জামায়াতের নেতৃত্ব স্থানীয় লোকদের ডেকেছিলাম। তারা উপস্থিত হয়ে প্রকৌশলীর কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন।’ উপজেলা জামায়াতের আমির আ ন ম ইলইয়াসও বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘ঘটনাটি দুঃখজনক। আমরা ইউএনওর সঙ্গে বসে বিষয়টি সুরাহা করেছি এবং প্রকৌশলীর কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছি।’

অন্যদিকে, প্রকৌশলী কাজী ফয়সাল বারী পূর্ণ এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি শুধু জানিয়েছেন, বিষয়টি মীমাংসা হয়ে গেছে এবং তিনি চান না এটি নিয়ে আর কোনো আলোচনা হোক। মাহবুব আলম মুন্সীও জানান, ইউএনও কার্যালয়ে বসে বিষয়টি সুরাহার অংশ হিসেবে তার কাছে থাকা ভিডিওগুলোও তিনি ডিলিট করে দিয়েছেন।